আগৈলঝাড়ায় সেই হাসপাতাল তিন মাসের শর্তে খোলার অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
এফ এম নাজমুল রিপন
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:৩৪ অপরাহ্ন
আগৈলঝাড়ায় সেই হাসপাতাল তিন মাসের শর্তে খোলার অনুমতি

একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অব্যাহতি প্রদান, রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ প্রদান, সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর সমুহের যথাযথ কাগজপত্র সংগ্রহ ও প্রশাসনের বিভিন্ন সুপারিশমালা কর্তৃপক্ষ ৯০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার শর্তে এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর বরিশালের আগৈলঝাড়ার অপচিকিৎসালয় হিসেবে পরিচিত সেই দুঃস্থ মানবতার হাসপাতাল খোলার অনুমতি প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে দুঃস্থ মানবতা হাসপাতালের পরিচালক ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক উপ-পরিচালক ডা. হিরন্ময় হালদার প্রশাসনের শুপারিশ বাস্তবায়নের চুক্তিতে স্বাক্ষর শেষে ইউএনও তিন মাসের জন্য শর্ত সাপেক্ষ হাসপাতাল চালুর অনুমতি প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. একেএম মনিরুল ইসলামসহ প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। পরিচালক ডা. হিরন্ময় ব্যাতীত চিকিৎসক বিহীন ওই হাসপাতালে রোগীদের আনারী লোক ও আয়া-বুয়ার অপচিকিৎসা, ভুয়া ডায়গনিষ্টিক রিপোর্ট প্রদানের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, ভুল চিকিৎসায় প্রসুতি মৃত্যু ও বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ দেখে স্থানীয় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র নির্দেশে ৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস। ওই অভিযানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. একেএম মনিরুল ইসলাম, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সুকলাল সিকদারসহ সরকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

সূত্র মতে, অভিযানে আদালতের হাকিম বিপুল চন্দ্র দাসকে হাসপাতাল পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ঠ কোন বৈধ কাগজপত্র দেখতে না পারায় প্রকাশ্যে হাসপাতাল সীলগালা করার ঘোষণা দিয়ে এক কর্মকর্তাকে দিয়ে তালা কিনে আনান ম্যাজিষ্ট্রেট। তাৎক্ষনিক সেখানে উপস্থিত হয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. হিরন্ময় হালদার সময় প্রার্থনা করলে আদালত কাগজপত্র প্রদর্শনের জন্য ওই দিন বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে ভর্তি রোগীদের উপজেলা সরকারী হাসপাতালের পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপরই শুরু হয় নাটকীয়তা। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বন্ধ হাসপাতালে ওই রাতেই তিনটা সিজারিয়ান অপোরেশন করা হয়। টনক নড়ে প্রশাসনের। এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর ৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা দুঃস্থ মানবতার হাসপাতাল বন্ধের জন্য প্রদান করা নোটিশ গ্রহন করেন ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. হিরন্ময় হালদার। বহু নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে বন্ধ হাসপাতালের জন্য ইউএনও ইউএইচএএফপিও ডা. একেএম মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে গঠন করেন তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি। ওই তদন্ত কমিটি কি রিপোর্ট প্রদান করেছে তা জানা যায়নি। লাল ফিতার ফাইলে আটকা পরেছে তদন্ত রিপোর্ট। বন্ধ হাসপাতাল খোলার অনুমতির জন্য প্রশাসনসহ বিভিন্ন জনের কাছে দৌড়ঝাপ শুরু করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেসরকারী হাসপাতাল পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তার, নার্স ও জনবল কাঠামো না থাকলেও বহু নাটকীয়তার আশ্রয় নিয়ে অবশেষে বন্ধের এক সপ্তাহ পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে ইউএনও বিপুল চন্দ্র দাস বন্ধ হাসাপতাল খুলতে কিছু শুপারিশ প্রদান করে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯০ দিনের জন্য হাসপাতাল খোলার অনুমতি প্র্রদান করেন।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব