রোহিঙ্গা সংকটে অন্তরায় ভারত ও চীন: কানাডীয় দূত

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: বুধবার ৬ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:০৪ অপরাহ্ন
রোহিঙ্গা সংকটে অন্তরায় ভারত ও চীন: কানাডীয় দূত

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে যে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে এর সমাধানে ভারত ও চীনকে অন্তরায় হিসেবে দেখছেন ঢাকায় সফররত কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত বব রে। তিনি বলেছেন, ‘ভারত ও চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভেতরে ভেতরে মিয়ানমারকে সমর্থন করায় রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে দেশটি। অপরদিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দূরবর্তী হওয়ায় আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো।’

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কানাডার দূত বলেন, ‘মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ-সমৃদ্ধ হওয়ায় দেশটির ক্ষমতার প্রধান অংশীদার সেনাবাহিনী এবং আন্তর্জাতিক স্বার্থগোষ্ঠীর বহুমুখী প্রতিযোগিতা এই সংকটকে ভিন্নমাত্রা দান করেছে। বিশেষ করে ভারত ও চীন এই ইস্যুতে তাদের পক্ষ নিয়েছে। যার জন্য তারা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।’ দূত বলেন, ‘অপরদিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দূরবর্তী অবস্থানে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো মিয়ানমারের রিরুদ্ধে কোনো দৃঢ অবস্থান গ্রহণ করতে পারছে না।’

বব রে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি আঞ্চলিক সংকটে রূপ নিতে চলেছে, যার দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা প্রভাব এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও অর্থনীতির ওপর পড়বে। তাই এখনই এই সমস্যা সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলো আন্তরিক হতে হবে।’ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী আলোচনার পরামর্শ দিয়ে কানাডার দূত বলেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে ব্যাপক ও দীর্ঘমেয়াদী আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সুরাহার পথ খোঁজা প্রয়োজন। তবে এই সংকট সমাধানের জন্য স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি অন্তবর্তীকালীন সমাধানের পথও খুঁজতে হবে।’

কানাডিয়ান হাইকমিশনের এই অনুষ্ঠানে সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি আঞ্চলিক সমস্যা। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একমাত্র চীনই সমাধান করতে পারে। চীনের সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক সহায়তায় সমাধানে না পৌঁছানো গেলে চীনের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা নিতে হবে। বিশেষ করে জাপান কিংবা আসিয়ান রাষ্ট্রগুলো এই সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে আমার মনে হচ্ছে এটা সমাধানে পাঁচ থেকে বছরের মতো লেগে যেতে পারে।’

ইনিউজ ৭১/এম.আর