সংবিধানে উপ-প্রধানমন্ত্রী পদ রাখাসহ যে ৫ প্রস্তাব বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর ২০২৪ ০১:০৫ অপরাহ্ন
সংবিধানে উপ-প্রধানমন্ত্রী পদ রাখাসহ যে ৫ প্রস্তাব বিএনপির

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংবিধান সংস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে বিএনপি। দলটি সংবিধানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার জন্য সুপারিশ করেছে, যার মধ্যে উপ-প্রধানমন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি, পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন করার প্রস্তাব রয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে এই প্রস্তাবনা জমা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। 


বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সংস্কারের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা আমাদের প্রস্তাবনাতে ব্যালান্স অব পাওয়ারের কথা উল্লেখ করেছি। আমাদের প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য হল, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ বন্ধ করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।" তিনি আরও জানান, সংস্কার কমিশন এই প্রস্তাবনায় সুপারিশ চূড়ান্ত করবে এবং তা সরকারের কাছে পাঠানো হবে, তারপর নির্বাচিত সরকার এসব সংশোধন করবে।


এছাড়া, প্রস্তাবনায় একাধিক নতুন পদ প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যমান কিছু বিধান সংস্কারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:


১. উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ: সরকারের কাজে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করার জন্য উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সংযোজন করা প্রস্তাবিত হয়েছে।

  

২. উপরাষ্ট্রপতির পদ: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য একটি নতুন উচ্চতর সাংবিধানিক পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।


৩. পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া: প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করার জন্য এই বিধান প্রবর্তন করার প্রস্তাব রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।


৪. সংসদে উচ্চকক্ষ: এটি একটি যুগান্তকারী প্রস্তাব, যেখানে বর্তমান একক কক্ষের সংসদে দ্বিতীয় কক্ষ বা উচ্চকক্ষ সংযোজনের মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা হবে।


৫. গণভোটের বিধান: জনগণের মতামত পেতে এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন করার সুপারিশ করা হয়েছে।


এদিকে, রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার মোট দশটি কমিশন গঠন করেছে, তবে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে সংবিধান ও নির্বাচনী সংস্কারের বিষয়গুলো। দেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত এবং জনগণের দাবি অনুসারে এসব সংস্কারের প্রস্তাবনা গৃহীত হলে তা একটি নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা হতে পারে, যা দেশের শাসনব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


এখন দেখার বিষয় হবে, সংবিধান সংস্কার কমিশন এই প্রস্তাবনায় কী ধরনের পরিবর্তন আনবে এবং সরকার এসব প্রস্তাব কতটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।