প্রায় পাঁচবছর আগে মেট্রোরেলের কাজ শুরু হয় উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে। তখন যেখানে বিরান ভূমি ছিল এখন সেখানে একের পর এক খুঁটি আর গার্ডার। এই স্থান থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম মেট্রোরেলের রুট হবে। এ রুট চলতিবছরের মধ্যে শেষ করতে দিনরাত কাজ চলছে প্রকল্পজুড়ে। দিয়াবাড়িতে পিলারের ওপর গার্ডার জোড়া দিয়ে দেড় কিলোমিটার মেট্রোরেল দৃশ্যমান করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে জাপান থেকে আসছে ৫ সেট অত্যাধুনিক রেল কোচ। রেলকোচ চলার উপযোগী করার জন্য গার্ডারের ওপর রেলপথ স্থাপনের কাজ এখন শুরু হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেড় কিলোমিটার গার্ডারের ওপর ট্রেনলাইনের বসানোর আগে যেসব কাজ করতে হয় তার আয়োজন চলছে। প্রকল্পের সিপি৩ সিপি৪ এ দুটি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত দিয়াবাড়ি থেকেআগারগাঁও অংশ। এ রুটে ১০ টি স্টেশন হবে। মেট্রোরেলের প্রথম স্টেশন উত্তরা উত্তর, এরপর উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর সেকশন-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছর শেষে মেট্রোরেল ট্রেনসেটসহ একটি পুরোপুরি দৃশ্যমান অবকাঠামোতে রূপ নেবে। প্রায় ৭০ শতাংশ মেট্রোরেলের কাজ তখন শেষ হয়ে যাবে। তবে আগামী বছরের শুরুর দিকে ট্রেনসেট দিয়ে মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালানো যেতে পারে। এর মধ্যে স্টেশনগুলো নির্মাণ করতে হবে। স্টেশনের ডিজাইনসহ প্রাথমিক কাজ আগেই শেষ করে রাখা হয়েছে।
মেট্রোরেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ‘ভায়াডাক্ট সাজানো হয়েছে দেড় কিলোমিটার। ট্রেনসেট আসার আগে ৬০-৭০ শতাংশ ভায়াডাক্টসহ রেললাইন হয়ে যাবে।’ এম এ এন ছিদ্দিক জানান, মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রথম অংশ আগারগাঁও পর্যন্ত ৩৫ ভাগ কাজ এগিয়েছে। এখন মেট্রোরেল পিলারের ক্যাপ ও ভায়াডাক্ট কাজ এগিয়ে চলছে। চার হাজার মিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে এ পর্যন্ত একহাজার ১২৫ মিটার নির্মাণ শেষ হয়েছে। আর ৭৪৪ পিলারের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নির্মাণ শেষ। আর ২০ ভাগ পিলারের কাজ শেষ হলেই শতভাগ পিলার কাজ শেষ হবে মেট্রোরেলের প্রথম অংশের। তবে মেট্রোরেলের দ্বিতীয় অংশ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের এখনও অগ্রগতি ৫ শতাংশের কম। এ অংশ ২০২২ সালে শেষ করতে পরিকল্পনা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা আগারগাঁও হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড এবং বিদ্যুৎ চালিত। এ মেট্রোরেল উভয় দিকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী টানবে। ২৪ সেট মেট্রোরেল ট্রেন চলবে উত্তরা মতিঝিল রুটে। প্রতি সেট মেট্রোরেল ট্রেনে প্রাথমিকভাবে ৬টি করে কোচ থাকবে। পরবর্তীতে আরও দুটি কোচ যোগ করে কোচের সংখ্যা আটটিতে উন্নীত করা হবে। মেট্রোরেলে প্রতিটি স্টেশন হবে দ্বিতীয়তলায় আর রুট যাবে তৃতীয় তলা উচ্চতায়। অর্থাৎ সিঁড়ি দিয়ে প্রথমে উঠতে হবে মেট্রোরেল স্টেশনে। টিকেট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধাদি থাকবে দোতলায় এবং ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম থাকবে তিনতলায়।
সড়কের মিডিয়ান বরাবর ভূমি থেকে প্রায় ১৩ মিটার ওপর দিয়ে নির্মিত এলিভেটেড মেট্রোরেলের কম্পন নিয়ন্ত্রণের জন্য থাকবে। শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য শব্দ নিরোধক দেয়াল স্থাপন করা হবে। এ ব্যবস্থাগুলো মেট্রোরেলের রুটে অবস্থিত ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুলোকে সম্ভাব্য সব ধরনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করবে। দিনের ব্যস্ততম সময়ে প্রতি সাড়ে চার মিনিট পরপর প্রতিটি স্টেশনের উভয়দিকে মেট্রোরেল থামবে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।