https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif

মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেতে আলোচনায় যারা

Ziaul Hoque
জিয়াউল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৪৪

শেয়ার করুনঃ
মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেতে আলোচনায় যারা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন বৃহস্পতিবার। তারপরেই গঠিত হবে নতুন সরকারের মন্ত্রিপরিষদ। আগামী রোববারই শপথ গ্রহণ করতে পারেন নতুন সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী সূত্র থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সু-নজরে থাকার চেষ্টা করছেন দলটির নেতারা। গত সোমবার সকাল থেকেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে দেখা করেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। আওয়ামী লীগ সভাপতিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি মূলত তার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাই করেছেন নেতারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির মধ্যম সারির এক নেতা বলেন, নির্বাচনের আগের দিন নেত্রীর কার্যালয়ের সামনে এত লোক ছিল না যত লোক নির্বাচনের পর দিন থেকে গণভবনে গিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। মন্ত্রিপরিষদের শপথের আগ পর্যন্ত হয়তো নেত্রীর কার্যালয়ে কিছু লোকজন আসা যাওয়া করবে, তারপর আবার কমে যাবে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে এখন আলোচনা মন্ত্রিপরিষদে স্থান পাচ্ছেন কারা? কেউ কেউ মনে করছেন এবার মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ পড়ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সংসদ নির্বাচন না করায় তার পরিবর্তে বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের অর্থমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানকে পদোন্নতি দিয়ে পূর্ণমন্ত্রী করার কথাও শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে, নতুন কেউ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবেন। আর লোটাস কামাল অর্থমন্ত্রী হলে এম এ মান্নান প্রতিমন্ত্রীই থাকছেন।

দলটির হাইকমান্ড সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য, শিল্প ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে কেউ যদি বার্ধক্যজনিত কারণে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে পরিবর্তন হতে পারে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কেউ কেউ বলছেন। সেক্ষেত্রে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম কিংবা টেকনোক্রেট কোটায় একজন বিশিষ্ট চিকিৎসকের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে সূত্রগুলো দাবি করছে।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অসুস্থতাজনিত কারণে মন্ত্রিপরিষদে স্থান নাও পেতে পারেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। পূর্বের ন্যায় এই মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই থাকবে। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রতিমন্ত্রীর বিষয়টিও অনিশ্চিত বলেই ধারণা সূত্রগুলোর। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বর্তমান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি স্বপদে থাকছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা জাতীয় পার্টির দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা পূর্ণমন্ত্রী হচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এই মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আসতে পারেন আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির কোনো নেতা।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif
জানা গেছে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব পরিবর্তন না হলেও সেখানে প্রতিমন্ত্রী আসতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও অপরিবর্তীত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বার্ধক্যজনিত কারণে মন্ত্রিপরিষদে পুনরায় দায়িত্ব না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই মন্ত্রীর। অপরিবর্তীত থাকতে পারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা দুই প্রতিমন্ত্রী।

জানা গেছে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্বপদে বহাল থাকলেও এই মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ করার সম্ভাবনা রয়েছে। একই রকম হতে পারে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রেও। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী পুনরায় এ দায়িত্ব পেলেও প্রতিমন্ত্রীর বিষয়টি অনিশ্চিত। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপমন্ত্রী পদোন্নতি পেয়ে প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রতিমন্ত্রীর বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত থাকলেও মন্ত্রীর দায়িত্ব পরিবর্তন হতে পারে। পরিবর্তন হতে পারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ঢাকা থেকে নির্বাচিত একজন ব্যরিস্টার আসতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।

দলটির বিভিন্ন সূত্রের দাবি অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের একজন টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রী হতে পারেন। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের একজন হতে পারেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় মন্ত্রী হতে পারছেন না দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে কেউ কেউ মনে করছেন এই মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তন নাও হতে পারে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী থাকলেও একটা প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভুমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বার্ধক্যজনিত কারণে দায়িত্ব না পেতে পারেন। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রতিমন্ত্রীর পদোন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদে স্থান না পাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী পুনরায় স্বপদে দায়িত্ব পাচ্ছেন বলেই শোনা যাচ্ছে। তার মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হতে পারেন। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব থাকতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। তবে তার মন্ত্রণালয় পরিবর্তন হতে পারে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে নতুন যুক্ত হতে পারেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মন্ত্রী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ1TK8B83CTTQWN3SJNRKSQ9.gif
প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শ ম রেজাউল করিম, আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, গোলাম দস্তগীর গাজী, নূর ই আলম চৌধুরী লিটন, দীপংকর তালুকদার, হাবিবে মিল্লাত, জাহিদ আহসান রাসেল, প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ আলোচনায় রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আগেই মন্ত্রিসভার শপথ হতে পারে। এর আগে সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশিত হবে এবং তারা শপথ নেবেন। গেজেটের পর শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

শেখ হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণে আশাবাদী প্রেস সচিব

শেখ হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণে আশাবাদী প্রেস সচিব

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে ইউনূস ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানান। প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বৈঠকে মোদি ইউনূসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ

মার্কিন শুল্ক ইস্যু: জরুরি সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

মার্কিন শুল্ক ইস্যু: জরুরি সভা ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের রপ্তানি পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে জরুরি সভা ডেকেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দুপুরের পর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সভায় মার্কিন শুল্ক নীতির প্রভাব ও সম্ভাব্য对策 নিয়ে আলোচনা করা হবে।

প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেবে মিয়ানমার

প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেবে মিয়ানমার

মিয়ানমার প্রথম ধাপে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তালিকা পর্যালোচনা করে তারা এই সংখ্যা নির্ধারণ করেছে।   বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে মোদি-ইউনূস বৈঠকে আলোচনা

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে মোদি-ইউনূস বৈঠকে আলোচনা

ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকটি আধা ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে, যেখানে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।   শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক অত্যন্ত গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। দুই দেশের

বাংলাদেশ চায় 'থ্রি জিরো' বিশ্ব গড়তে: ড. ইউনূস

বাংলাদেশ চায় 'থ্রি জিরো' বিশ্ব গড়তে: ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ 'থ্রি জিরো' (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য কার্বন নির্গমন) বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।   তিনি বলেন, বিমসটেক অঞ্চলে বিশ্বের ২০ শতাংশ মানুষ বাস করে। এই অঞ্চলে চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা সুযোগে রূপান্তরের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য সমতা, পারস্পরিক সম্মান ও অভিন্ন