প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৪
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত ‘ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলমান গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতা বন্ধে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যার নজির।
সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, এই হত্যাযজ্ঞ মানবতাবিরোধী অপরাধের সামিল। দায়ীদের আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ বরাবরই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে উল্লেখ করে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তি কেবলমাত্র ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে সম্ভব। এ লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সক্রিয় হতে হবে।
গাজার পুনর্গঠনে আরব দেশগুলোর গৃহীত পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এই উদ্যোগ জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হলে বাংলাদেশ তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রমে যেকোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা প্রতিহত করতে হবে।
এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি আয়োজন করে ফ্রান্স ও সৌদি আরব, যার উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিন সংকটের একটি স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য একত্রিত করা।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই সম্মেলনে ১১৮টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে বাংলাদেশ ছিল অন্যতম সক্রিয় অংশগ্রহণকারী।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানে বাংলাদেশের ভূমিকা ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘে এই ধরনের সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক ঐক্যমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের আহ্বান ও অবস্থান বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থী উদ্যোগগুলোর প্রতি নতুন করে মনোযোগ সৃষ্টি করতে পারে।