প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১৫:৪১
রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রকৃতির ধ্বংসে মানুষের ভূমিকাই মুখ্য, এবং এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী আমরাই, যারা এই সভায় উপস্থিত। তিনি বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে কেউ জিততে পারেনি এবং পারবেও না, বরং মানুষই নিজে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে। ড. ইউনূস বলেন, কবিদের ভাষায় পৃথিবীর সব পানি যদি কালি হতো, গাছগুলো যদি কলম হতো, তাহলেও মানুষের অপরাধ লেখা শেষ হতো না। এই অপরাধ প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। সভায় তিনি বলেন, বর্তমানে পৃথিবী যুদ্ধ, প্রযুক্তির অপব্যবহারসহ নানা সংকটে জর্জরিত হলেও সবচেয়ে বড় ও উপেক্ষিত সংকট হলো প্রকৃতির ক্ষয়।
তিনি বলেন, প্রকৃতির বিরুদ্ধে এই আচরণ একপ্রকার আত্মঘাতী। মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান না করে তাকে শত্রু বানিয়ে ফেলেছে। এর ফলেই সৃষ্টি হচ্ছে জলবায়ু সংকট, যা এখন দৈত্যের মতো আমাদের সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ড. ইউনূস বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে তিনটি বড় সংকট তৈরি হয়েছে—জলবায়ু পরিবর্তন, প্রকৃতি ধ্বংস এবং জীববৈচিত্র্যের হুমকি। প্লাস্টিক এমন এক জিনিস যার মৃত্যু নেই। সবকিছু ধ্বংস হলেও প্লাস্টিক থেকেই যাবে। ফলে এটি ধীরে ধীরে সব কিছুকে গ্রাস করছে।
তিনি বলেন, জলাশয় থেকে সমুদ্র—সবখানে প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে। এই সমস্যার দায় আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। দিবস পালন করে আমরা ঘরে ফিরে গেলেও আমাদের ব্যবহার আর অভ্যাসে কোনো পরিবর্তন আসে না, যেটা প্রকৃত সংকট।
ড. ইউনূস হুঁশিয়ারি দেন, জীবনযাত্রার পদ্ধতি পরিবর্তন না করলে এই যুদ্ধে মানবজাতির পরাজয় অনিবার্য। শুধু কথায় নয়, প্রতিটি মানুষকে নিজের অভ্যাসে পরিবেশবান্ধব চিন্তাধারা প্রতিফলন ঘটাতে হবে। নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বসবাসযোগ্য পৃথিবী রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এখনই সময় আমাদের জেগে ওঠার, নইলে আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন দেখা দেবে।