প্রকাশ: ৮ জুন ২০২৫, ১১:৪১
বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (৯ জুন) চার দিনের একটি সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। এই সফরের মূল এজেন্ডা হলো যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়টি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, যদিও বিশ্লেষকরা সফরের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন।
১০ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত চলবে ইউনূসের এই সফর। এটি তার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম ইউরোপ সফর। সফরের সময় ১১ জুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। ১২ জুন তিনি ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং একই দিনে কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন, যা তার জন্য গৌরবের বিষয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি এই সফরে অগ্রাধিকার পাবে। তবে, কূটনৈতিক পর্যায়ে এ নিয়ে কতটা অগ্রগতি হতে পারে তা নিয়ে সন্দেহের মধ্যে রয়েছেন অনেকে। সাবেক কূটনীতিক রাশেদ চৌধুরী মনে করেন, নির্বাচিত সরকার গঠনের আগে ব্রিটিশ সরকার এই ধরনের উদ্যোগে সীমিত সাড়া দেবে। তার কথায়, “যুক্তরাজ্য গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং তারা চায় বাংলাদেশে একটি স্থায়ী, নির্বাচিত সরকার গঠিত হোক।”
রাশেদ চৌধুরী আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থাকে ব্রিটিশ সরকার সাময়িক হিসেবে দেখছে। ফলে এমন সময়ে আন্তর্জাতিক স্তরে আস্থা কিছুটা কমে গেছে, যা কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে। তবে তিনি মনে করেন, ইউনূসের এই সফর ভবিষ্যতের জন্য দিকনির্দেশক হতে পারে।
সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে বিশেষ পুরস্কার গ্রহণ। এটি ইউনূসের কাজ ও বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় তার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সফর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যদিও তাৎক্ষণিক ফলাফল সীমিত থাকতে পারে।
অতএব, অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর অর্থ ফেরত আনা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, আগামী নির্বাচনের পরই এর প্রকৃত কার্যকারিতা স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।