ড. ইউনূসকে আরও পাঁচ বছর দেশ চালাতে ঈদগাহে প্রতিধ্বনি জনতার

ঈদুল আজহার পবিত্র দিনে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনন্য এক দৃশ্যের জন্ম দিল সাধারণ মানুষের কণ্ঠ। নামাজ শেষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মুহূর্তে উপস্থিত জনতার মধ্য থেকে গর্জে উঠল এক আবেগঘন দাবি—“স্যার আপনাকে ৫ বছর চাই।” এই আবেদন ছিল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে।

গত ৮ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের শাসনভার গ্রহণ করে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার গঠনের পর থেকে রাষ্ট্র সংস্কার, দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা গঠনের কাজে তারা সক্রিয়ভাবে এগিয়ে চলছে।

সম্প্রতি এই সরকারের মেয়াদ ন্যূনতম পাঁচ বছর করার দাবি তোলেন কিছু সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। এমনকি গত ১৮ এপ্রিল রাজু ভাস্কর্যের সামনে কিছু তরুণ অনশন করে এই দাবির পক্ষে অবস্থান নেন। এরও আগে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া এক চিরকুটে লেখা ছিল, ‘ড. ইউনূস স্যারকে আরও ৫ বছর চায় সাধারণ জনগণ। আল্লাহ তুমি সহজ করে দাও।’

আজ ঈদের জামাতেও সেই একই দাবি মানুষের মুখে শোনা যায়। ড. ইউনূস হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে সামনের কাতারে বসে নামাজ আদায় করেন এবং মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক তাঁর সঙ্গে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা জানান।

পরবর্তীতে ড. ইউনূস তিন উপদেষ্টার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং উপস্থিত সবাইকে ঈদ মোবারক জানিয়ে বলেন, “এই পবিত্র দিনে সবাই দেশের মঙ্গলের জন্য দোয়া করবেন।” এরপর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে সবার উদ্দেশ্যে হাত নাড়তে নাড়তে ঈদগাহ ত্যাগ করেন তিনি।

ঈদের প্রধান জামাত শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। অংশ নেন সরকারের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ কূটনীতিক, বিচারপতি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। ঈদের এই পবিত্র আয়োজনেও মানুষের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা যেন প্রকাশ পেল অনন্য এক রূপে। জনতার কণ্ঠে পুনরায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে—“স্যার আপনাকে ৫ বছর চাই।”