প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১৫:১৭
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
জাপানের টোকিও শহরে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে জাপানের মতো পরীক্ষিত বন্ধুর সহায়তা প্রয়োজন।
শুক্রবার টোকিওতে জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) ও জাইকা যৌথভাবে আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’। সেখানে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “বাংলাদেশ গত ১৬ বছরে এক ধরনের ভূমিকম্পের মধ্যে দিয়ে গেছে। সবকিছু ভেঙে পড়েছে। এখন আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য—সবকিছু আবার নতুন করে গড়ে তোলা। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি এবং সেটিকে বাস্তবে রূপ দিতে চাই।”
তিনি জাপানকে বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “একজন সত্যিকারের বন্ধু কষ্টের সময় পাশে থাকে। জাপান সবসময় আমাদের পাশে থেকেছে এবং আমরা চাই এই বন্ধুত্ব আরো গভীর হোক।”
অধ্যাপক ইউনূস নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে একটি ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমাদের কাজ অসম্ভবকে সম্ভব করা। আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই যে, এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে এবং তা নিখুঁতভাবে।”
মাতারবাড়ি উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা করার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইউনূস বলেন, “এটি কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, এটি মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার একটি পথ। এই প্রকল্প পিছিয়ে থাকা এলাকার অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ কেবল নিজের জন্য নয়, বরং নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্যও সমুদ্রপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বার হতে পারে। মাতারবাড়ি সেই দ্বার হয়ে উঠতে পারে বিশ্বের জন্য।”
জাপানি ভাইস মিনিস্টার তাকেউচি শিনজি বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। জাপান শুরু থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও কৌশলগত অংশীদার হিসেবে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও টোকিওস্থ রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী।