প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১২:২৭
জাপানের টোকিওতে আয়োজিত নিক্কেই ফোরামের তৃতীয় দিনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, চলতি বছর ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না সব রাজনৈতিক দল, বরং শুধু একটি নির্দিষ্ট দল এ দাবি করছে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে আরও গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করা।
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সংস্কারের অগ্রগতি না হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ডিসেম্বর থেকে জুন—এই ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানান ড. ইউনূস।
ড. ইউনূস আরও বলেন, তার নিজের কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। তিনি কেবল একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে চান। তিনি উল্লেখ করেন, ভালোভাবে সংস্কার না করে তড়িঘড়ি করে নির্বাচন দিলে তা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এসময় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে এবং তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ। জনগণের ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও মর্যাদার নিশ্চয়তা দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, এ ইস্যুতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসিত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা মনে করিয়ে দেন।
এশিয়ার শান্তি, আস্থা ও অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, শুধু অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে মানুষের কল্যাণ ও বিশ্বাসের মাধ্যমে। তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ গড়তে হলে সাহস ও সৃষ্টিশীলতা দরকার।
সব মিলিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, সরকার সময় নিয়ে সঠিক সংস্কারের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, যাতে কোনো পক্ষের সন্দেহ বা বিতর্ক না থাকে।