ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে পাকিস্তানে বিক্ষোভ,বহু হত্যা ও ১ হাজার গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর ২০২৪ ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে পাকিস্তানে বিক্ষোভ,বহু হত্যা ও ১ হাজার গ্রেপ্তার

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে গত কয়েকদিনে ইসলামাবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানী পুলিশ জানিয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমন করতে পাকিস্তান পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৯৫৪ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এই বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতা-কর্মী। 


পুলিশের মহাপরিদর্শক আলী নাসির রিজভী জানিয়েছেন, ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার ভোরে ইসলামাবাদ থেকে বিক্ষোভকারীদের পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানানো হয়। 


বিক্ষোভের সময় সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তা ও আধা-সামরিক বাহিনীর রেঞ্জার্সের চার সদস্য নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তি প্রয়োগ করে। একাধিক প্রতিবন্ধকতার মুখে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। 


মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) পিটিআই নেতারা ইসলামাবাদে প্রবেশ করতে চেষ্টা করেন, যদিও তাদের রাজধানীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তারা ডি-চক এলাকায় সমাবেশের পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু রেড জোনে প্রবেশের পর পুলিশ ও সেনারা তাদের বাধা দেয়। এই ঘটনায় খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর এবং ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি বিক্ষোভস্থল ত্যাগ করেন, এবং পরবর্তীতে পিটিআই কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ স্থগিত করার ঘোষণা দেয়।


পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি দাবি করেছেন, "আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাহসিকতার সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করেছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।"


এদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি জানায়, "বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী।"


ইমরান খান, যিনি ২০২২ সালের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন, বর্তমানে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দাবি করেন। পিটিআই এবং তার সমর্থকরা প্রতিনিয়ত তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। 


এ ঘটনার পর পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশব্যাপী আলোচিত হয়েছে।