কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চুরির অভিযোগে মা-মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে মারতে মারতে এলাকা ঘোরানোর ঘটনায় হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মিরানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ভুক্তভোগী পারভীন আক্তার চকরিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।মামলার অন্য আসামিরা হলেন- হারবাং বৃন্দাবনখিল এলাকার জিয়াবুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিন (২৮), মাস্টার মাহমুদুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম (১৯) ও এমরান হোসেনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩২)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী পারভীন দাবি করেন, গত শুক্রবার (২১ আগস্ট) একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে দুই মেয়ে সেলিনা আক্তার ও রোজিনা আক্তার, ছেলে এমরান এবং তার বন্ধু ছুট্টুসহ চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারাস্থ পূর্ব হাইদারনাশির ছোট মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাটি হারবাং বৃন্দাবনখিল লালব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে দু’টি মোটরসাইকেলে মোট ছয়জন তাদের পিছু নেয়। এসময় অটোরিকশাচালক ভয়ে হারবাং স্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে ছুটতে থাকেন। এক পর্যায়ে মোটরসাইকেল আরোহী ছয়জনসহ আরও বেশ লোকজন অটোরিকশাটি আটকে ফেলে।
এসময় চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ধাওয়া করা লোকজন গরু চুরির অপবাদ দিয়ে আমাদের মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমাদের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের কানের দুল, গলার চেইন ও চারটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
পরে তারাসহ স্থানীয় লোকজন আমাদের কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে মারতে মারতে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যান। ওখানে নিয়ে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল দ্বিতীয় দফায় আবারও আমাদের অকথ্যা ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে প্রথমে চেয়ার দিয়ে ও পরে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ইউপি চেয়ারম্যান মিনারুলসহ সবাই মিলে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. শাহ পরাণ বলেন, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এজন্য আমাদের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ মামলা পরিচালনার জন্য আমরা একজন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছি। চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহিদুল্লাহ মামলাটি পরিচালনা করবেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, হারবাংয়ে মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী পারভীন বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হয়েছে। মামলায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছেন। অভিযুক্ত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।