ভূরুঙ্গামারীতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , উপজেলা প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৩শে এপ্রিল ২০২৪ ০৬:০৩ অপরাহ্ন
ভূরুঙ্গামারীতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে নির্মাণাধীন রাঙ্গালীকুটি ব্রিজের স্লাব ঢালাই নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে প্রধান মিস্ত্রিসহ ঠিকাদারের লোকজনের বিরুদ্ধে। এসময় মিস্ত্রি ও তার লোকজন এক কার্য সহকারীকে আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।


স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে ওই ব্রিজের স্লাব ঢালাইয়ে কথা ছিলো। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান, কার্য সহকারী শ্যামল কুমার কুন্ড, তপন কুমার সরকার ও মিলন মিয়া কাজ তদারকি করতে যান।

কাজ শুরুর আগে স্লাব জয়েন্টে ব্যবহৃত লোহার পাতের পুরুত্ব ১০ মিলিমিটারের পরিবর্তে ৬ মিলিমিটার দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় লোকজন ঢালাই বন্ধ রাখতে বলেন। এসময় উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমানসহ তিন কার্য সহকারী মিস্ত্রিকে ঢালাইয়ের অনুমতি না দিয়ে ফিরতে চাইলে ঠিকাদারের সাইড ম্যানেজার জুয়েল, প্রধান মিস্ত্রি সবুজ মিয়া ও তার সহযোগী মিস্ত্রিরা তাদের পথরোধ করেন।


এসময় উভয় পক্ষের বাকবিতন্ডার একপর্যায় মিস্ত্রি সবুজ মিয়াসহ তার সহযোগীরা প্রকৌশলী আতাউর রহমানকে কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। একপর্যায় তাদের চারজনকে আটকিয়ে রাখা হয়। এসময় আতাউর রহমান অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলায় পাঠানো হয়।


এদিকে কার্য সহকারী শ্যামল কুমার ও তপন কুমার ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হলেও অপর কার্য সহকারী মিলন মিয়া মোটরসাইকেলসহ আটকা পড়েন। পরে কচাকাটা থানা পুলিশ এসে তাকে মোটর সাইকেল সহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।


উপজেলা এলজিইডি অফিসের কার্য সহকারী শ্যামল কুমার কুন্ড বলেন, ঢালাই শুরুর আগে স্লাবের বিশেষ জয়েন্টের পাতের পুরুত্ব কম অভিযোগে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় আমরা ফিরতে চাইলে মিস্ত্রি ও ঠিকাদারের লোকজন আমাদের পথরোধ করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এসময় আমাদের উপর কিলঘুষির ঘটনা ঘটে।


মারপিটের শিকার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান বলেন, প্রধান মিস্ত্রি সবুজ মিয়ার নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন মিস্ত্রি শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেছে। 


অভিযুক্ত প্রধান মিস্ত্রি সবুজ মিয়া মারপিটের কথা অস্বীকার করে বলেন, একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও জয়েন্টের পাত না থাকায় ওই প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করে দিয়ে গেছেন। সেদিন অনেক ক্ষতি হয়েছিল। আজ তাদের পরামর্শে ৬ মিলিমিটার পাত লাগানো হয়েছে। সেই পাতের পুরুত্ব কম হওয়ায় স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ভুলে বারবার কাজ বন্ধ রাখলে অনেক টাকা ক্ষতি হয়। জনগণকে বুঝিয়ে ঢালাই শুরু করতে তাদের পথ আটকানো হয়েছিলো।


উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, উপ সহকারী প্রকৌশলীকে যারা মারপিট করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।


কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বদেব রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা হবে।


২০২০-২১ অর্থবছরে টেন্ডার হওয়া ৮২ মিটারের গার্ডার ব্রিজটির কাজ পেয়েছে যশোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটে। পরে এটি সাব কন্ট্রাক্ট নেয় লালমনিরহাটের পাটগ্রামের রফিকুল ইসলাম। স্থানীয় সরকার বিভাগের এই ব্রিজটির নিমার্ণ ব্যায় ধরা হয়েছে ৪কোটি ৮৬ লাখ টাকা।