শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় জমে উঠেছে শীতের পিঠার বিকিকিনি। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা থেকে শুরু করে নানা রকমের পিঠার স্বাদ নিতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা ছোট ছোট পিঠার দোকানগুলোতে পিঠা বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরাইল উপজেলার বাজার রোড, উচালিয়াপাড়া মোড়, কালিকচ্ছ রোডসহ বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যার পর থেকেই পিঠার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ছোট্ট ভ্যানগাড়ি বা চুলায় মাটির পাতিলের ওপর পাতলা কাপড়ে মোড়া ভাপা পিঠা তৈরি হচ্ছে ক্রেতাদের সামনেই। এসব পিঠার দোকান শুধুই স্বাদের নয়, বরং স্থানীয় অনেকের জীবিকার উৎসও।
উপজেলা হাসপাতাল মোড়ে পিঠা বিক্রি করেন আব্দুল কাইয়ুম। তিনি জানান, শীতের সময় পিঠার ব্যবসা বেশ ভালো চলে। তার দোকানে দাঁড়িয়ে গরম ভাপা পিঠা খাচ্ছিলেন কামরুল হোসেন। তিনি বলেন, “বাসায় প্রতিদিন পিঠা তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই দোকানের পিঠাই ভরসা। এই পিঠাগুলো যেমন তৃপ্তি দেয়, তেমনি বিক্রেতাদের জন্য এটি আয়েরও বড় একটি মাধ্যম।”
সেখানে দাঁড়িয়ে পিঠা খাচ্ছিলেন সবুজ নামের এক কর্মজীবী। তিনি বলেন, “জীবিকার তাগিদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয় না, তাই আগের মতো পিঠার স্বাদ মিস করি। তবে এখানে দাঁড়িয়ে খাওয়া পিঠায় গ্রামের মতো স্বাদ না পেলেও কিছুটা তৃপ্তি পাওয়া যায়।”
শীতের এই পিঠার স্বাদ শুধু পেট ভরায় না, শীতকালীন গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়াও নিয়ে আসে। সরাইলের অন্নদা মোড়ে সন্ধ্যায় পিঠার দোকানগুলোতে বিভিন্ন রকমের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। তারা জানান, পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করার পাশাপাশি স্থানীয়দের শীতের বিশেষ আনন্দের স্বাদ উপহার দিতে পেরে তারা সন্তুষ্ট।
গ্রামীণ ঐতিহ্যের শীতকালীন এই পিঠা নিয়ে বাংলা সাহিত্যেও রচিত হয়েছে অনেক গান-কবিতা। যদিও নাগরিক ব্যস্ত জীবনে ঘরে পিঠা তৈরির সুযোগ কম, তাই দোকানের পিঠাই এখন সাধারণ মানুষের প্রধান ভরসা। সরাইলের এই পিঠার হাট শীতের এক বিশেষ উৎসব হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।