বইমেলায় এবারও সুইচ বাংলাদেশের হুইল চেয়ার সার্ভিস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: বুধবার ২৪শে মার্চ ২০২১ ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন
বইমেলায় এবারও সুইচ বাংলাদেশের হুইল চেয়ার সার্ভিস

অমর একুশে বইমেলায় আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও যারা পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারেন না তাদের জন্য এবারও হুইল চেয়ার সার্ভিস দিচ্ছে সামাজিক সংগঠন সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। গত তিন দিনে পাঁচজন ব্যক্তিকে তারা সেবা দিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেবার পরিধি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।


মেলার তৃতীয় দিন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে এই সেবা দিয়ে আসছে সংগঠনটি। টিএসসি থেকে বইমেলা পর্যন্ত ১০টি হুইল চেয়ারের মাধ্যমে প্রতিদিন মেলা চলাকালে সেবা দিচ্ছে সুইচ বাংলাদেশ। আগামী দুই দিনের মধ্যে দোয়েল চত্বর থেকে বইমেলা পর্যন্ত একই সেবা চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।


মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মেট্রোরেলের কাজের জন্য এবার একটু আগে থেকেই রাস্তা বন্ধ। যারা অসুস্থ তাদের পায়ে হেঁটে মেলায় যাওয়া কষ্টসাধ্য। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার ব্যক্তিদের বিনামূল্য হুইল চেয়ার সেবার দিয়ে আসছেন তারা।


মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও বইমেলায় আমাদের হুইল চেয়ারের সংখ্যা ২০টি। করোনার কারণে আমাদের শুরুটা এবার সেভাবে ভালো হয়নি। অনেকেই জানেন না যে, এবারও এই সেবারটা আছে কি-না।‘


২০১৬ সালে সংগঠনটি বাংলা একাডেমির কাছে এ সেবা কার্যক্রম পরিচালনার আবেদন করে। সে বছরই বাংলা একাডেমি অনুমোদন দেয়।বিনামূল্যে দেয়া এ সেবার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক মুক্তিযোদ্ধা, শারীরিকভাবে সমস্যা সুস্থ মানুষ আছে, তাদের জন্যই আমাদের এ সেবা।‘


এদিকে এ সেবা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন অনেক স্বেচ্ছাসেবক। এদের মধ্যে রয়েছেন সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবকরা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। আছেন তৃতীয় লিঙ্গের স্বেচ্ছাসেবক। প্রতিদিন নিজের নিয়মিত কাজ করেন তৃতীয় লিঙ্গের সিমরান।


ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, নিজের নিয়মিত কাজ শেষ বিকেলে চলে আসেন টিএসসি চত্বরে। সেখানে মেলায় আগত অসুস্থ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সেবা দিচ্ছেন তিনি। মানবিক কাজে আসার পর সবাই তাকে সম্মান দিচ্ছে।


নিজের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমে মানুষের জন্য কাজ করতে পারায় নিজেকে গর্বিত মনে হয় বলে জানান সিমরান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার জাতির লোকজনের সঙ্গে থাকি। আমার কাজ শেষ করে এখানে আসি। আমার গুরু মা আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। এটা একটা ভালো কাজ। সবাই আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন।‘


মেলায় নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে সিমরান বলেন, ‘আমরা পায়ে হেঁটে মেলা ঘুরে দেখতে পারি। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারেন না বা দেখতে পারেন না। কিন্তু তাদের মধ্যেও অনেকে শিক্ষিত আছেন। তাদেরও ইচ্ছে হয় বই মেলা দেখতে। তাদের জন্য আমাদের এ সেবাটা দিচ্ছি।‘