বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ভবনের বর্ধিত অংশের মালিক তাসভির উল ইসলাম (৬২) ও ভবনের জমির মালিক প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক (৭৩)। ইতিমধ্যে এ দুজনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছিন আহসান চৌধুরী। এর আগে রোববার আদালতে শুনানি হয় যেখানে অংশ নিয়েছিলেন মডেল ও অভিনেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া। ভবনের জমির মালিক প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক সম্পর্কে তার শ্বশুর।
আদালতে শ্বশুরের পক্ষ নিয়ে পিয়া বলেন ‘আমি নিজেও এফআর টাওয়ারে অফিস করি। ফারুক ভূমির মালিক। কিন্তু ভবন ব্যবস্থাপনা করেন না। ব্যবস্থাপনার জন্য একটি অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। উনি ওই অ্যাসোসিয়েশনে নেই। তারাই বলতে পারবে ভবনকে কেমন রেখেছে?’ এ সময় ২০০৮ সালে ভবনটিতে আগুন লেগেছিল বলে তথ্য দেন তিনি। আর সেই সময় ভবনে যথেষ্ট অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই জানিয়ে ফারুক গুলশান থানাকে অবগত করেছিলেন বলে জানান তিনি। পিয়া বলেন, ‘ওই ভবনের লিফটও ঠিক ছিল না। ফারুক নিজে টাকা খরচ করে সবার কথা চিন্তা করে তা ঠিক করিয়েছেন।’
১১ বছর পর একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে মন্তব্য করে পিয়া বলেন, ‘ফারুক ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন বয়স্ক মানুষ। এ বয়সে এসে, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে যদি রিমান্ডে নেয়া হয় তাহলে কি টাওয়ার…আর কী ভোগ করবে? জীবন নিয়েই তো টানাটানি, স্যার।’ ফারুককে রিমান্ডে না দিতে একইরকম যুক্তি উপস্থাপন করেন ফারুকের পক্ষের আইনজীবী ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান খান রচি। শুনানিতে আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ফারুক বয়স্ক মানুষ। তিনি ক্যান্সারের রোগী। যদি আপনি তাকে (ফারুক) রিমান্ডে দেন তাহলে তারা (ডিবি পুলিশ) তাকে টর্চার করে মেরে ফেলবে। বিজ্ঞ আদালতের কাছে আমার নিবেদন, আপনি মানবিক দিক বিবেচনা করে অন্তত জেলখানায় দু’দিন, পাঁচদিন, ১০ দিন জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ প্রদান করুন।’
জমি বুঝিয়ে দেয়ার পর ভবন বিষয়ে ফারুকের আর কোনো দায়-দায়িত্ব থাকে না জানিয়ে আইনজীবী বলেন, ‘প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। পুলিশের হাতে দেয়া মানে অপ্রয়োজনীয় একটা টর্চারের মধ্যে ঠেলে দেয়া।’ শ্বশুর ফারুকের পক্ষে শুনানিতে মডেল পিয়া ও আইনজীবী এসব কথা তুলে ধরেও রিমান্ড ঠেকাতে পারেননি। এফআর টাওয়ারের ভূমি মালিক ফারুক ও এর বর্ধিত অংশের মালিক বিএনপি নেতা তাসভির উল ইসলামকে সাতদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসিন আহসান চৌধুরীর আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১টার দিকে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ফারুক এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডে ২৬ জন নিহত ও ৭৩ জন আহত হয়েছেন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।