প্রকাশ: ৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৩০
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। শুনানির সময় আদালতে তোলা হলে কলিমুল্লাহ নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন, তবে বিচারক তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হননি এবং জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে ড. কলিমুল্লাহ দাবি করেন তিনি রংপুরেই থাকতেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে নিয়মিত ছিলেন। তবে বিচারক প্রশ্ন করেন, তিনি কি একসঙ্গে ভিসি, বিভাগীয় প্রধান ও ডিনের দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা। এর উত্তরে কলিমুল্লাহ বলেন, আগের ভিসিরাও একই ধরনের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিচারক তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগের কথা তুলে ধরেন, কিন্তু কলিমুল্লাহ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, কলিমুল্লাহ টিভি টকশোতে এত বেশি ব্যস্ত ছিলেন যে ১৭ ঘণ্টা কাজ করার দাবিটি বাস্তবসম্মত নয়। আদালত শেষে মন্তব্য করেন, কে কী করেছে সেটা একমাত্র আল্লাহ জানেন, তবে আপাতত তাকে কারাগারে যেতে হবে। আদালত আরও বলেন, জেল কিংবা কবর, একাই যেতে হয়, সেখানে কেউ সঙ্গে যায় না।
এদিকে দুর্নীতির অভিযোগে ১৮ জুন দুদকের দায়ের করা মামলায় কলিমুল্লাহ ছাড়াও আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম হাবিবুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা উন্নয়ন প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন, অনুমোদন ছাড়া ৩০ কোটি টাকার বেশি চুক্তি সম্পাদন, অগ্রিম বিল প্রদান এবং নিরাপত্তা জামানতের অর্থ থেকে বেআইনিভাবে লোন দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত। এছাড়াও সরকারি খাতের বিধিমালা উপেক্ষা করে দ্বিতীয় পরামর্শক নিয়োগ এবং দরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ফ্রন্ট লোডিং থাকলেও সেটি উপেক্ষা করা হয়েছে।
কলিমুল্লাহকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন। দুদক জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত চলছে এবং আরও তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।