কবরের জীবন সহজ নয়, বরং এটি এমন এক কঠিন পরিস্থির মধ্যে ফেলা, যেখানে মানুষের আমল ও বিশ্বাসের পরীক্ষা নেওয়া হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনেও কবরের আজাবের দৃশ্য অতি ভয়াবহ ছিল। তিনি একাধিক হাদিসে কবরের আজাব থেকে বাঁচতে সতর্ক করেছিলেন।
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, "আমি কখনো কবরের চেয়ে ভয়াবহ কোনো দৃশ্য দেখিনি।" এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে তিনি তাঁর উম্মতকে কবরের আজাব থেকে সাবধান থাকতে বলেন। এই কারণে, কবরের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য বিশেষ দোয়া ও হাদিস উল্লেখ করেন তিনি।
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবীজি বলেছিলেন, "তোমরা মৃতদের দাফন করা বর্জন করে দেবে, এ ভয় না থাকলে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম; যেন তিনি তোমাদের কবরের কিছু আজাব শুনিয়ে (দেখিয়ে) দেন।" এটি প্রমাণ করে যে, কবরের শাস্তি ও পরীক্ষার ভয় আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, কবরের আজাব থেকে বাঁচতে আমাদের আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে কবরের আজাব থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে বারবার সাহায্য প্রার্থনা করতেন। "আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি" (হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই) এই দোয়া আমাদের প্রতিদিনের জীবনে পাঠ করা উচিত।
একদিন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদের নিয়ে এক কবরস্থানে পৌঁছেছিলেন। সেখানে তিনি দেখলেন, কবরবাসীরা শিরকের কারণে মৃত্যু বরণ করেছেন। এ সময় তিনি সাহাবীদের বললেন, "তোমরা সকলে কবরের আজাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো।" এই বাণী থেকে আমরা বুঝতে পারি, কবরের আজাব এমন এক কঠিন শাস্তি যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা যারা মুসলিম, তাদের উচিত কবরের আজাব থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা এবং হাদিস অনুযায়ী আমল করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কবরের আজাব থেকে মুক্তি দান করুন এবং সঠিক পথ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন।
লেখক: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, সাবেক ইমাম ও খতিব, কদমতলী মাজার জামে মসজিদ, সিলেট।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।