প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৪
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫০ জনে দাঁড়িয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ জন। রবিবার রাতে স্থানীয় সময় শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে একাধিক জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। সরকারি মালিকানাধীন বখতার নিউজ এজেন্সির বরাতে চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এ তথ্য জানায়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক শূন্য। এর উৎপত্তিস্থল জালালাবাদের উত্তর-পূর্বে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং ভূগর্ভের ৮ কিলোমিটার গভীরে। মূল ভূমিকম্পের পর একই এলাকায় আরও দুটি আফটারশক রেকর্ড করা হয়, যার মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আটকে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে।
সরকারি মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “দুঃখজনকভাবে রাতের ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছেন।” তিনি নিহতদের জন্য দোয়া এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউএসজিএস ভূমিকম্পের পর একটি সতর্কতা জারি করেছে, যা অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তুলে ধরে। সংস্থাটি বলেছে, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে তৎপরতা বাড়ানো না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে পশ্চিমাঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে সেটি ছিল অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
নতুন এই ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ দেশটির মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে এরই মধ্যে খাদ্য ঘাটতি ও স্বাস্থ্য সেবার সংকট চলছে। এখন নতুন এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সহায়তার প্রস্তুতি নিচ্ছে।