প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১৮:২৮
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়েছে সিরিয়ার ভূখণ্ডেও। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার হাসাকাহ প্রদেশের কাসরুক অঞ্চলে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হঠাৎ করে সংঘটিত হয় বিস্ফোরণ। সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা মেহর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যদিও এই হামলার ধরন, উৎস বা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সম্পর্কে এখনো কোনো নিশ্চিত বিবরণ পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
ঘটনার পরপরই মার্কিন সেনারা পুরো ঘাঁটি ঘিরে ফেলে এবং আশপাশের এলাকায় নজরদারি জোরদার করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে ড্রোন ও সামরিক হেলিকপ্টারের টহল কয়েক ঘণ্টা ধরে চলতে দেখা গেছে। বিস্ফোরণের পর আশপাশের জনপদে তল্লাশি চালানো হচ্ছে এবং প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে।
এই ঘটনার পটভূমিতে রয়েছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সাম্প্রতিক উত্তেজনা। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর পরই এই বিস্ফোরণ ঘটলো। বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা একটি কৌশলগত বার্তা বহন করছে, যা এই অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যে পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
ইতিপূর্বে সিরিয়ার বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটিতে একাধিকবার রকেট ও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই ঘটেছে অজ্ঞাত হামলাকারীদের মাধ্যমে। যদিও এসব হামলার পেছনে ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্টতা সন্দেহ করা হয়, প্রকৃত হামলাকারীদের চিহ্নিত করা সব সময় সম্ভব হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিণত হয়েছে। মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর অবস্থান কৌশলগত হলেও এগুলো এখন ক্রমাগত ঝুঁকির মুখে পড়ছে, বিশেষ করে ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ধারাবাহিকতায়।
এই ঘটনার ফলে সিরিয়া অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র আরও সামরিক সরঞ্জাম ও নজরদারি প্রযুক্তি মোতায়েন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও এখনো কোনো পক্ষই শান্তির জন্য গঠনমূলক উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত নয়, বরং সংঘাতের পরিসর দিন দিন আরও বিস্তৃত হয়ে পড়ছে।