মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের হাওয়া বইছে যুক্তরাষ্ট্রে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ, যেমন সরকারি কর্মচারীদের ব্যাপক ছাঁটাই এবং নির্বাহী ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে এক হাজার ২০০ বিক্ষোভের আয়োজনের কথা ছিল। এটি ছিল ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এক দিনের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ওয়াশিংটনের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শহরের কানেটিকাট অ্যাভিনিউতে জড়ো হন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, যার মধ্যে লেখা ছিল ‘যুক্তরাষ্ট্রে কোনো রাজা নেই’, ‘মাস্ককে বিতাড়িত করুন’।
বিক্ষোভটির নাম রাখা হয়েছে ‘হ্যান্ডস অফ’, যার অর্থ হতে পারে ‘আমাদের নিজের মতো চলতে দাও’। এতে প্রায় ১৫০টি গোষ্ঠী অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে একটি হল ‘ইনডিভিজিবল’। এর সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, বিক্ষোভের মাধ্যমে তারা পরিষ্কার বার্তা দিতে চান যে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ইলন মাস্ককে নতুন গঠন করা সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দেন। এর ফলে ২৩ লাখ কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখের বেশি কর্মী পদ শূন্য হয়। মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোর শহরের কাছে সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের কার্যালয়ের বাইরে শত শত মানুষ অবস্থান নেন, কারণ এই সংস্থা বর্তমানে ডিওজিইর অন্যতম লক্ষ্যবস্তু।
এর পাশাপাশি, ট্রাম্পের বিভিন্ন নির্বাহী আদেশ যেমন অবৈধ অভিবাসন, বিদেশি সহায়তা, এবং ট্রান্সজেন্ডার অধিকার নিয়ে তার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অঙ্গরাজ্যে মামলা হয়েছে এবং আদালত কিছু আদেশ স্থগিত করেছে।
এদিকে, ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ইউরোপেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বার্লিন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, প্যারিস, এবং লন্ডনে হাজার হাজার মানুষ একত্র হয়ে ‘আইনের শাসন’, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করুন’ স্লোগান দিয়েছে।
এ ঘটনায় একথা পরিষ্কার যে, ট্রাম্প এবং মাস্কের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক জনরোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।