ভারত ও মিয়ানমার থেকে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল দেশে এসেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার ২৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন
ভারত ও মিয়ানমার থেকে ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল দেশে এসেছে

বাংলাদেশে সম্প্রতি ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল এসে পৌঁছেছে, যা ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই চালের মধ্যে ২২ হাজার মেট্রিক টন মিয়ানমার থেকে এবং ১৫ হাজার মেট্রিক টন ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। খাদ্য অধিদফতর এই চাল আমদানি করেছে, যা বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সরবরাহ ব্যবস্থা মজবুত করতে সহায়ক হবে।


মিয়ানমার থেকে ২২ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল নিয়ে এমভি এটিএন ভিক্টরি নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এই চালটি জি টু জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে আমদানি করা হয়েছে। একই সময়, ভারত থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১৫ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল আমদানি করা হয়েছে, যা নিয়ে এমভি বিএমসি প্যানডোরা নামে আরেকটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে। 


খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব, জাহাজ থেকে চাল খালাস করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।” খাদ্য অধিদফতর এখন এই চালের গুদামজাতকরণ এবং সুষ্ঠু বিতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।


আমদানিকৃত চালের একটি বড় অংশ সরকারের খাদ্য ভাণ্ডারে সংরক্ষণ করা হবে, যা পরবর্তীতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হবে। বিশেষত, রবি মৌসুমে খাদ্যের সরবরাহে যাতে কোনো ধরনের ঘাটতি না থাকে, সে জন্য এই চাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খাদ্য সংকট রোধে এই চালের আমদানি সহায়ক হবে।


এছাড়া, বাংলাদেশে বর্তমানে চালের বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের এই ধরনের আমদানির পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিদেশি আমদানির পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে।


ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা চালের পরিমাণ দেশে চালের সরবরাহ ব্যবস্থা আরও মজবুত করবে, পাশাপাশি বাজারে দামের অস্থিরতাও কমাতে সহায়ক হবে। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আতপ চালের প্রতি চাহিদা বেশী, যা সাধারণত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। 


খাদ্য অধিদফতর জানিয়েছে, চালের এই চালান দ্রুত খালাস করে সারা দেশে সরবরাহ শুরু করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও এই প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও চালের সরবরাহে কোনো ধরণের বিলম্ব হবে না। 


এছাড়া, আগামী মাসগুলোতে খাদ্য অধিদফতর আরও চাল আমদানির পরিকল্পনা করেছে, যা খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সহায়ক হতে পারে। সরকারের এসব উদ্যোগের ফলে দেশে চালের দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং সাধারণ মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছানো সহজ হবে। 


বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের এই পদক্ষেপগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাল আমদানির মাধ্যমে দেশীয় কৃষকের ওপর চাপ কমবে এবং একদিকে যেমন বাজার স্থিতিশীল হবে, তেমনি অন্যদিকে সরকারি উদ্যোগে দেশে খাদ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে।