৩ মাস আরামে দেশে থেকে এবার কোলকাতায় পৌঁছালেন- কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৭ই ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
৩ মাস আরামে দেশে থেকে এবার কোলকাতায় পৌঁছালেন- কাদের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তৈরি হওয়া গণজোয়ারের চাপে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ভারতে চলে গেছেন। তার দেশত্যাগের পর দলের নেতাকর্মীরা কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েন। কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় তারা একে একে আত্মগোপনে চলে যান কিংবা দেশ ত্যাগ করেন। 


শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা দেশ ছেড়ে চলে যান। তাদের মধ্যে ৫ আগস্টের পরপরই দেশ ত্যাগ করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ নাসিম ও নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। 


এছাড়া, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গুঞ্জন চলছে। তার দেশত্যাগের বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি করে। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গণঅভ্যুত্থানের পর তিন মাস ৫ দিন তিনি দেশে অবস্থান করলেও, সেই সময়ে তাকে নিরাপদে রাখা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে তিনি ভারতের দিকে পা বাড়াতে শুরু করেন।


ওবায়দুল কাদের প্রথমে ভারতে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন, তবে তিনি দলের সভাপতির কাছ থেকে কোনো সাড়া পাননি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলন নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের একাধিক মন্তব্যে শেখ হাসিনা যথেষ্ট বিরক্ত ছিলেন। বিশেষ করে তার ‘ছাত্রলীগই আন্দোলন দমন করতে পারবে’ মন্তব্যটি আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলে দেয় বলে মনে করছেন দলের নেতারা। 


নভেম্বরের ৮ তারিখে ওবায়দুল কাদের শিলং হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে তিনি বেশ কিছুদিন নিরাপদে অবস্থান করেন। কিছুদিন পর সড়কপথে বিশেষ ব্যবস্থায় কলকাতা পৌঁছানোর পর, দিল্লি না গিয়ে কলকাতায় অবস্থান করতে থাকেন। তবে, ভারত সরকারের কাছে তার জন্য লবিং চলছিল। শেখ হাসিনা তার জন্য আগ্রহ দেখাননি।


এছাড়া, গত ৯ নভেম্বর চট্টগ্রামের হালিশহরের এক বাড়িতে ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ অভিযান চালায়। তবে তাকে না পেয়ে, তার স্ত্রীর বড় ভাই নুরুল হুদা বাবুকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। 


শেখ হাসিনার পতনের পর দেশত্যাগী নেতাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত, এবং জনগণের মাঝে নেতাদের দেশত্যাগ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।