নওগাঁয় ২৬ আসামির যাবজ্জীবন: খুনের রায় ২৬ বছর পর

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: সোমবার ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
নওগাঁয় ২৬ আসামির যাবজ্জীবন: খুনের রায় ২৬ বছর পর

নওগাঁয় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৯৯৮ সালে কৃষক আজিমুদ্দিনকে হত্যা মামলায় ২৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মোখলেছুর রহমান এই রায় দেন। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভরট্ট শিবনগর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কৃষক আজিমুদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। 

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আজিমুদ্দিনের ছেলে আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মান্দা থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগপত্র দেয়।


মামলার চলাকালীন আটজন আসামি মারা যাওয়ায় তাঁদের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২৬ জন আসামির মধ্যে ২২ জনকে আদালতে হাজির করা হয়, এবং চারজন পলাতক থাকেন। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে গ্রেপ্তার করে সাজা পরোয়ানা অনুযায়ী কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।


আদালতে উপস্থিত যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২২ আসামির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন: মনছুর আলী, আলতাব হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, ফজের আলী, ফজলুর রহমান, কাদের আলী, জবেদ আলী, কাজেমুদ্দিন, অহিদুল ইসলাম, আছিব উদ্দিন, মোখলেছার রহমান ম-ল, কাশেম আলী, লিয়াকত আলী, জালাল, শাহজাহান আলী, ছাইদুর রহমান, পৈক্যা ওরফে বুলু, আজাদ আলী মৃধা, আশরাফুল মৃধা, কলিমুদ্দিন মন্ডল পটল ওরফে পরশ উল্যা ও গুল মাসুদ।


পলাতক সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন: এনামুল হক, আনিছুর রহমান, মোখলেছুর রহমান এবং মোজাহার আলী।


মামলার বিস্তারিত জানায়, আজিমুদ্দিন একই গ্রামের মসজিদের জমি লিজ নিয়ে ভোগদখল করতেন। জমি নিয়ে মনছুর আলী, শাহজাহান আলী ও আলতাব হোসেন ম-লের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। ১৯৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর সকালে মনছুর আলী, শাহজাহান আলী ও আলতাব হোসেন মণ্ডল লোকজন নিয়ে আজিমুদ্দিনের জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে যান। আজিমুদ্দিন বাধা দিলে তাঁকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়, যার পরিণামে তিনি গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।


রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি শুনানি করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সামসুর রহমান এবং আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সামসুর রহমান বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আজিমুদ্দিনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আদালত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।