ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে রজব মাস একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সময়। এটি আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে পূর্ণ একটি মাস। রজব মাসে গুনাহ মাফ, নফল ইবাদত এবং দোয়া কবুলের সুযোগ প্রদান করা হয়। এই মাসে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজের ঘটনা।
রজব মাস জান্নাতের এক নদীর নাম হিসেবেও কোরআনে উল্লেখিত। হাদিসে বলা হয়েছে, এই নদীর পানি দুধের মতো সাদা এবং মধুর চেয়েও মিষ্টি। যারা এই মাসে নফল রোজা রাখবে, তাদের জন্য রজব নদীর পানীয় প্রস্তুত থাকবে। যারা একবার এই পানি পান করবে, তাদের আর কখনো পিপাসা লাগবে না।
আরবি বারো মাসের মধ্যে রজব মাসকে আল্লাহ বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন। কোরআনের সূরা তাওবায় উল্লেখ করা হয়েছে, চারটি মাস যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য নিষিদ্ধ। রজব তাদের মধ্যে একটি। আইয়ামে জাহেলিয়াতের সময়েও রজব মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ থাকত।
এই মাসে ইবাদতের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের এ দোয়া পড়তে বলতেন, “আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা ইলা শাহরির রমাদান।” অর্থাৎ, হে আল্লাহ, আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং রমজানের ফজিলত অর্জন করার তৌফিক দিন।
রজব মাসে সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেইনরা বিশেষ কিছু নফল আমল করতেন। এর মধ্যে প্রথম বৃহস্পতিবারের রাত “লাইলাতুল রাগায়িব” হিসেবে পরিচিত। এছাড়া ২৬ রজব দিবাগত রাত “শবেমেরাজ” হিসেবে পালিত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজের ঘটনা ইসলামি ইতিহাসের এক বিস্ময়কর অধ্যায়।
রজব মাসে দোয়া কবুলের বিশেষ সময় রয়েছে। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, রজব মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করেন। এ মাসে প্রথম তারিখে নফল নামাজ এবং ২৭ তারিখে রোজা রাখার ফজিলত উল্লেখযোগ্য। হাদিসে বলা হয়েছে, রজব মাসের ২৭ তারিখে রোজা রাখলে জাহান্নামের আগুন রোজাদারের জন্য হারাম করা হবে এবং জান্নাত তার জন্য ওয়াজিব হবে।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রজব মাসের ফজিলত অর্জনের তৌফিক দিন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।