আশাশুনিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রান্তিক পরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২১শে নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩১ অপরাহ্ন
আশাশুনিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রান্তিক পরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি অভিযোগ

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রান্তিক পরীক্ষা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক নতুন নিয়ম চালু করে দুর্নীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক ও স্থানীয়রা। বিশেষত, উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মনের দায়িত্বে থাকা সময়ে এই দুর্নীতির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।


বিগত বছরগুলোতে প্রান্তিক পরীক্ষা ক্লাস্টার পর্যায়ে আয়োজিত হতো, যেখানে স্থানীয় শিক্ষকদের সমন্বয়ে পরীক্ষা পরিচালনা এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়মিতভাবে দাখিল করা হতো। কিন্তু বর্তমান শিক্ষা অফিসারের যোগদানের পর থেকে উপজেলার প্রান্তিক পরীক্ষা আয়োজনে স্বচ্ছতার অভাব দেখা দিয়েছে এবং দুর্নীতি শুরু হয়েছে। বিশেষত, পরীক্ষার ফি নিয়ে অনেক অভিযোগ এসেছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৬ টাকা করে ফি নেওয়া হলেও, প্রতি সেট প্রশ্নের খরচ মাত্র ৫ টাকা। ফলে অতিরিক্ত টাকা কিভাবে খরচ হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।


আশাশুনি উপজেলার মোট ১৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫ হাজার ১৪৬ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেয়। হিসাব অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোট ২,৪২,৩৩৬ টাকা আদায় হওয়ার কথা, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৭৫,৭৩০ টাকা খরচ হয়েছে। অব্যয়িত ১,৬৬,৬০৬ টাকা কোথায় গেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, এই অতিরিক্ত টাকা একাউন্টে জমা না রেখে শিক্ষা অফিসার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন।


এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, যখন তারা হিসাব চেয়েছেন, তখন কোনো সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি। তারা অভিযোগ করেন, ফান্ডে কোনো টাকা নেই, কারণ সব টাকা ভাগ হয়ে গেছে। আরও অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে ছোটখাটো মেরামত কাজ বা অন্যান্য কাজের জন্যও টাকার বিনিময়ে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মন জানান, তিনি শুধু প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন এবং ক্লাস্টার অফিসারদের দায়িত্বের আওতায় এ পরীক্ষাগুলো। তিনি দাবি করেন, আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার দায়িত্ব তার নয়। তবে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু সেলিম ও গৌরাঙ্গ গাইনও কোনো সঠিক হিসাব দিতে পারেননি। তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষার ফি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্লিপের মাধ্যমে আদায় করা হয় এবং অব্যয়িত টাকা একাউন্টে জমা রয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে তারা কিছু জানেন না।

এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা আরও স্বচ্ছতা এবং হিসাবদেবীর দাবি করেছেন।