ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটে সম্প্রতি ফিলিস্তিনের জনগণের সহায়তার জন্য নিবেদিত জাতিসংঘের সংস্থা ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইনিয়ান রিফিউজিস (আনরোয়া) এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে একটি বিল পাস হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) উত্থাপিত দুটি বিলে ১২০ জন এমপির মধ্যে ৯২ জনই আনরোয়ার কার্যক্রম বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের ভৌগলিক সীমার ভেতরে আনরোয়ার কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আনরোয়ার সদর দপ্তরের কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে, এবং কার্যক্রম চালানোর জন্য ইসরাইলের অনুমতি গ্রহণ করা হবে। এই সিদ্ধান্ত ইসরাইলের দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি প্রতিফলন।
এছাড়া, আরেকটি বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, আনরোয়ার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করছে ইসরাইল। ফলে সংস্থাটি ইসরাইলের কাছ থেকে যে সহযোগিতা পেত, তা এখন থেকে বন্ধ থাকবে। এই পরিবর্তনগুলো আনরোয়ার কর্মীদের জন্য কূটনৈতিক ভিসার পরিবর্তে সাধারণ ভিসার ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত করেছে।
আনরোয়া প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৭ সালে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য খাদ্য সহায়তা, আশ্রয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করার লক্ষ্যে। দীর্ঘকাল ধরে সংস্থাটি ফিলিস্তিনে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসলেও, এর অধিকাংশ কার্যক্রমের জন্য ইসরাইলের ওপর নির্ভরশীলতা ছিল। তাই ইসরাইলে আনরোয়ার কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলে গাজার এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।
৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলার পর থেকে গাজায় ইসরাইলি অভিযানের কারণে ৪৩,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরাইল দাবি করেছে যে হামাসের সঙ্গে আনরোয়ার বিভিন্ন প্রকল্পের সম্পর্ক রয়েছে, যদিও আনরোয়া এবং জাতিসংঘ এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
নতুন বিলটি পাসের পর কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাজ্যসহ আনরোয়ার প্রধান দাতা দেশগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা ইসরাইলের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিলটি কার্যকর না করতে। এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।