দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে করোনা সংক্রম বৃদ্ধির সাথে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। মহামারি করোনাকালে হঠাৎ করে বিভাগজুড়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের ভেতরে বেড সংকট থাকায় অনেকেই হাসপাতালের সামনে খোলা স্থানে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তবে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর এ সময়টাতে আলাদা প্রস্তুতি থাকে স্বাস্থ্য বিভাগের। অবশ্য বর্তমান সময়ে বিগত দিনের থেকে আক্রান্তের সংখ্যাটা একটু বেশিই। বিভাগ জুড়ে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসায় ৪০৬টি টিম কাজ করছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৬৯৩ জন এবং ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে বরিশালে তিন হাজার ২১৭, পটুয়াখালীতে পাঁচ হাজার ৯২০, ভোলায় ছয় হাজার ৬০৬, পিরোজপুরে তিন হাজার ৪৮৬, বরগুনায় চার হাজার ৪০ ও ঝালকাঠিতে দুই হাজার ৪২৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন।
গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। যেখানে সাড়ে তিন মাসে মোট আক্রান্তর সংখ্যা ২৫ হাজার ৬৯৩, সেখানে গেলো এক মাসেই আক্রান্ত হয়েছে ১২ হাজার ৮৯৬ জন। অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছেন গেলো এক মাসে।
আবার মাসিক হিসেবে অনুযায়ী, গত এক মাসের মধ্যে সব চেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে গত সপ্তাহে। গত ৩০ দিনে যেখানে ১২ হাজার ৮৯৬ জন রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে সেখানে গত সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৭৭ জন রোগী। গত সপ্তাহেই বিভাগে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে তিনজন রোগী মৃত্যু বরণ করেছেন।
যার মধ্যে ঝালকাঠি জেলায় এক জন ও বরিশাল জেলায় এক জন রয়েছেন। বরিশাল জেলায় মৃত্যুবরণ করা ২ জনের বাড়িই বাকেরগঞ্জ জেলায়।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়ের সহাকরী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, চলতি মাসের শুরু থেকে করোনার পাশাপাশি বরিশালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। মূলত সব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি। এ থেকে রোধ পেতে হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বিশেষ করে সবাইকে নিরাপদ খাবার গ্রহণ ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
আর ডায়রিয়া রোধে সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার পাশাপাশি আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।