শ্রীমঙ্গলে পাবলিক লাইব্রেরি দখলমুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: রবিবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪৬ অপরাহ্ন
শ্রীমঙ্গলে পাবলিক লাইব্রেরি দখলমুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাবলিক লাইব্রেরি ও শিশু উদ্যান অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সচেতন নাগরিক সমাজ শ্রীমঙ্গল। রোববার দুপুরে জয়নগরস্থ উদ্যানের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। বক্তারা জানান, ২০০৭ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক লাইব্রেরিটি আধুনিকায়ন করেন। একসময় সেখানে প্রচুর বই ও পাঠক ছিল। কিন্তু ২০১২ সালে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ কলেজের নামে ভবনটি দখল করে নেন। পরবর্তীতে কলেজ সরালেও লাইব্রেরি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি।  


মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছরেও শিশু উদ্যানের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এখনো এটি অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে এবং ভূমিখেকোদের দখলের শিকার হচ্ছে। বর্তমানে উদ্যান ও লাইব্রেরির একাংশ দখল করে একটি বেসরকারি কেজি স্কুল শ্রেণি কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা বেআইনি। তারা বলেন, সরকারি জমিতে কীভাবে বেসরকারি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে, প্রশাসনের কাছে তার ব্যাখ্যা চান।  


শ্রীমঙ্গল শিশু উদ্যানের নাম পরিবর্তন করে শেখ রাসেল শিশু উদ্যান করা হয়েছে, যা নিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, এটি প্রতিষ্ঠাকালীন নামেই ফিরে আসতে হবে। একইসঙ্গে লাইব্রেরি ও উদ্যান দখলমুক্ত করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।  


মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি নিলয় রশিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মোজাহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী হোসাইন আহমদ আফজল, সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান চৌধুরী তুহিন, গণমাধ্যমকর্মী কাওছার ইকবাল, ইসমাইল মাহমুদ, আহমেদ ফারুক মিল্লাদ, স্টুডেন্ট এলায়েন্স শ্রীমঙ্গলের প্রতিনিধি ফারহানা নাজনীন নিশি, ছড়াকার জাবেদ ভুইয়া, দীপ দত্ত, বিকাশ বাপনসহ অনেকে।  


বক্তারা দাবি জানান, পাবলিক লাইব্রেরি ও শিশু উদ্যান অবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে। তারা উপজেলা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।  


মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা গেটের পুরোনো নাম ফলকের উপরে ‘শ্রীমঙ্গল শিশু উদ্যান’ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। তারা তাদের দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন।  


মানববন্ধনে সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যসহ কয়েকশ মানুষ অংশ নেন। পথচারীরাও এতে সংহতি জানান এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।  


শিক্ষার্থীরা জানান, পাবলিক লাইব্রেরি ও শিশু উদ্যান তাদের পড়াশোনা ও বিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি অবৈধ দখলমুক্ত না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।