বিচারকদের জামিন দেওয়ার আগে সতর্ক থাকার পরামর্শ-আইন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিবেদক - আইন আদালত
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:২৫ অপরাহ্ন
বিচারকদের জামিন দেওয়ার আগে সতর্ক থাকার পরামর্শ-আইন উপদেষ্টা

রাজধানীর রাজারবাগে মঙ্গলবার এক কর্মশালায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, হুটহাট কাউকে জামিন না দিয়ে বিচার-বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেন, মামলার এজাহার যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে এবং তথ্য নিশ্চিত করতে হবে, যাতে অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে।  


তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে নানা ধরনের অরাজকতা, গুম ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে, যা বিচারব্যবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। প্রতিটি হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ন্যায়বিচারের প্রতি জনগণের আস্থা থাকে। বিচারকরা যদি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করেন, তবে তাদের অবস্থানের কোনো মানে থাকে না।  


মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইনের সঠিক প্রয়োগ বিষয়ে আয়োজিত এ কর্মশালায় আসিফ নজরুল বলেন, দেশে বর্তমানে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর মধ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এসব ফ্যাসিস্ট শক্তি বিশাল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।  


তিনি বলেন, বিচার বিভাগসহ প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যদি সঠিকভাবে কাজ করে, তবে সমাজে অপরাধ ও বিশৃঙ্খলা কমে আসবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সঠিক আইনপ্রয়োগ ও দোষীদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হলে আইনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে।  


এ সময় তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিচের স্তর পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে বিচারকদের উচিত, কোনো মামলার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করা। আইন ও তথ্য বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।  


আইন উপদেষ্টা জানান, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রাখতে হলে নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক চাপ বা পক্ষপাতিত্ব বিচার ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে দেওয়া যাবে না।  


তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় শুধু আইন প্রয়োগ করলেই হবে না, বরং প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। যেকোনো ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে সমাজে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব।  


বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো যদি তাদের দায়িত্ব সততার সাথে পালন করে, তাহলে জনগণের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা তৈরি হবে। নতুবা বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও গভীর হবে বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল।