চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ময়ুরপঙ্খী ফ্লাইট ‘ছিনতাই চেষ্টার’ ঘটনায় নিহত পলাশ আহমেদের প্রাক্তন স্ত্রী চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার সিমলাকে ফের জেরার মুখোমুখী হতে হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট টানা পাঁচ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি গত ২৫ আগস্ট ভারতের মুম্বাই থেকে ঢাকায় আসেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা তাকে চট্টগ্রামে এসে বক্তব্য দেওয়ার কথা জানান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সিমলা সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ মূলত পলাশের সঙ্গে তার পরিচয় ও বিয়ে সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তিনি আরো জানান, বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনার আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাই তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানেন না। কেননা, বিচ্ছেদের পর থেকে পলাশের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিলো না বলেও জানান তিনি।
পলাশ মানসিকভাবে ‘ডিসটার্বড’ ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন সিমলা। বলেন, তার কিছু কিছু আচরণের কারণে তিনি বিরক্ত ছিলেন বলেই তাকে আর ভালো লাগেনি। সে কারণেই তিনি পলাশকে তালাক দিয়ে দেন। ‘ম্যাডাম ফুলি’ অভিনেত্রী পুলিশকে পলাশের সঙ্গে তার বিয়ে ও বিচ্ছেদের বিষয় এবং এর মাঝের কিছু ঘটনার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পলাশের সঙ্গে গুলশানের এক কফিশপে এক পরিচালকের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তার পরিচয় হয়। তিনি নিজেই পলাশকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, এরপর তাদের বিয়ে হয় ২০১৮ সালের ৬ মার্চ এবং বিচ্ছেদ হয় সে বছরের ৫ নভেম্বর।
জিজ্ঞাসাবাদের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পরিচালক রশিদ পলাশের জন্মদিনে সিমলার সঙ্গে পরিচয় হয় পলাশের। সেই সূত্রে পরিচয়ের ছয় মাস পর ২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিয়ে করেন সিমলা ও পলাশ। বিয়ের পর মাত্র ৯ মাস টিকে ছিল তাদের সংসার। ৯ মাসের মাথায় তালাকের সিদ্ধান্ত নেন তারা। ওই বছরের (২০১৮) নভেম্বরে তাদের ডিভোর্স হয়।’ পলাশের সঙ্গে সিমলার বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে তিনি জানান, দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে না পারা এবং সিমলাকে পলাশের মানসিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছিল। রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্যই আমাদের হাতে এসেছে। এমন আরো অনেক বিষয় আমরা জেনেছি, যা এখনই গণমাধ্যমকে জানানো যাচ্ছে না। তদন্তের স্বার্থে আমাদের তা গোপন রাখতেই হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫টা ১৩ মিনিটে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমান বিজি-১৪৭ উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পর পলাশ আহমেদ নামে এক যুবক বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। ৫টা ৪১ মিনিটে বিমানটি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানের ইমার্জেন্সি ডোর দিয়ে যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের দ্রুত বের করে আনা হয়। পরে যৌথ বাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিমের অভিযানে মারা যান পলাশ আহমেদ। ঘটনার পর মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে নায়িকা সিমলা বলেছিলেন, ‘দেশের স্বার্থের জন্য আমাকে যদি কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাহলে আমি তৈরি আছি, নো প্রবলেম, আমি ক্লিয়ার।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।