জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সমগ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জামাতিকরণ করা হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জামাতি চেতনার লোকজন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, যা দেশের জন্য ভয়ংকর। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়াও করা হয়।
রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারের দায়িত্বে থাকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য নিষিদ্ধ করতে চায়, যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, সরকার ও রাষ্ট্রকে এক করে ফেলা হচ্ছে, যা একটি স্বৈরাচারী সরকারের পরিচয়। তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা গণতন্ত্রের অংশ এবং এ ধরনের সমালোচনাকে স্বাগত জানানো উচিত। অথচ মাউশির বক্তব্যের মাধ্যমে সমালোচনার সুযোগ বন্ধ করার প্রচেষ্টা চলছে।
তিনি দুর্নীতির উদাহরণ টেনে বলেন, জনপ্রশাসনের সচিবের নামে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পরও তাকে বহাল রাখা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তিরা এখনও প্রশাসনে টিকে আছে। এছাড়া, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন কাঠামো তৈরি হওয়ার কথা থাকলেও পুরোনো দোসররা এখনও সচিবালয়ে সক্রিয়।
বিএনপির এই নেতা শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নীতি-নৈতিকতা উপড়ে ফেলেছেন এবং নিজের স্বার্থে ক্রসফায়ার, আয়নাঘর তৈরি করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা তার ছেলে, ভাইপো, ভাইগ্নাদের জন্য পূর্বাচলে সরকারি প্লট আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি ব্রিটিশ এমপি, তিনিও পূর্বাচলে জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন।
রিজভী বলেন, দেশের জনগণ আশা করে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা হবে, যা জনগণের স্বার্থে কাজ করবে। তবে বর্তমান সরকারের অধীনে আমলাদের পরামর্শে গণবিরোধী ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট ছিল না বলেই তিনি ভীত এবং পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে তৈরি হওয়া আন্দোলনের ভিত্তি রেখেছেন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান। এই আন্দোলন গণমানুষের সমর্থনে আরো শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ডিইএব-এর সভাপতি প্রকৌশলী মো. হানিফের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. হাবিবুর রহমান হাবিব এবং সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন। তাদের আলোচনায় বিএনপির চলমান আন্দোলন, নেত্রীর মুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বক্তব্য উঠে আসে।
সভায় বিএনপি নেতারা সরকারের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেন এবং জনগণের স্বার্থে নতুন কাঠামো তৈরির আহ্বান জানান। তাদের মতে, দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করতে হলে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা জরুরি। তারা বিএনপির আন্দোলনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে জনগণের সমর্থনে অটল থাকার অঙ্গীকার করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।