আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন, আতঙ্কিত এলাকাবাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৪ই মার্চ ২০২৪ ০৩:৪০ অপরাহ্ন
আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন, আতঙ্কিত এলাকাবাসি

আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের খোলপেটুয়া নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে । যার ফলে এলাকাবাসী চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। বুধবার ভাঙ্গা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান। তিনি জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।


সরেজমিনে ও স্থানীয়রা জানান, গত (১২মার্চ) মঙ্গলবার বিকালের ভাটার সময় প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিশ খালি পাঞ্জেগানা মসজিদের পূর্ব পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫০ মিটার বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে মূল বেড়িবাঁধের এক তৃতীয়াংশ ভেঙ্গে নদী গর্ভে চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে । ভাঙ্গনটি মূল বেড়িবাঁধে ভাঙন লাগার সাথে সাথে মূল বেড়িবাঁধের মুখে বাঁধের উপর বসবাস করা আফফান হোসেনের পরিবার গভীর রাতের মধ্যে তার বসবাস করা ঘরটি তাড়াহুড়ো করে ভেঙ্গে খুলে নিয়েছে। 


২০২০ সালের ৫ই মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে এই ইউনিয়নের মানুষ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয় । বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এসকল এলেকার মানুষ প্রায় দুই বছর পানি বন্দি অবস্থায় ছিলেন । আম্পানের সেই ক্ষত এখনো সারিয়ে উঠতে পারিনি তারা। এখনো এ সকল এলাকার মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। আবারও ভেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হলে প্রতাপনগর ইউনিয়নে মানুষের বসবাসের উপযোগী থাকবে না বলে দাবী স্থানীয়দের ।তারা বলেন জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে খোলপেটুয়া নদীর লোনা জলে প্রতাপনগর ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে।


 আর এলাকা প্লাবিত হলে এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। এছাড়াও এলাকার চাষাবাদসহ মৎস্য চাষ, গবাদিপশু, রাস্তা ঘাটে সহ স্কুল মাদ্রাসা কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ মন্দির সহ সার্বিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে জানান এলাকাবাসীর।


ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী  বলেন,পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ প্রশাসনের সকল স্তরে ভাঙ্গের বিষয়ে জানানো হয়েছে। আশাকরি দ্রুত ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।এরপরও এলাকাবাসীকে সজাগ থাকতে বলেছি কারণ মূল ভাঙ্গের পাশাপাশি বেড়িবাধের উপর বসবাস করা অন্যান্য পরিবার গুলো চরম আতংকিত অবস্থা সময় পার করছে।


তিনি আরো বলেন প্রতাপনগর ইউনিয়নটি ঘুর্নিঝড় আম্পান ও ইয়াসের কারনে বিগত দু বছর খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা নদীর লোনা জলে প্লাবিত ছিল। এহেন অবস্থায় এলাকার মানুষ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ অবস্থায় আবারো যদি খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। তবে এলাকার সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি হবে। দীর্ঘ চার বছর পর এবছরই এলাকাবাসী ধান চাষ সহ নানা ধরনের ফসলের চাষাবাদ করেছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে ভাঙ্গন প্রতিরোধে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়ের দাবি জানান তিনি ।


সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আশিকুর রহমান  বলেন জোয়ারে খোলপেটুয়া নদীর পানি দুই থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে যে কারণে এখানে ভেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ে এখানে সংস্কারের কাজ শুরু করব এবং ভবিষ্যতে যাতে এখানে আর ভাঙ্গন দেখা না দেয় সে বিষয়ে সবসময় এই জায়গাটি মনিটরিংয়ে রাখা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।