শিল্পী নাজমা আক্তারের ছবিতে বাংলাদেশকে খুঁজে পাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৮শে জানুয়ারী ২০২০ ১১:২২ পূর্বাহ্ন
শিল্পী নাজমা আক্তারের ছবিতে বাংলাদেশকে খুঁজে পাই

শিল্পী নাজমা আক্তার এর শিল্পকর্ম নিয়ে লিখিত ওপার বাংলার প্রখ্যাত শিল্প সমালোচক মৃণাল ঘোষ রচিত শিল্পী ‘নাজমা আক্তার-এর ছবি মূর্তের অমূর্ত রুপ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, যদিও বিমূর্ত ধারার ছবি পশ্চিম থেকে এসেছে কিন্তু নাজমা আক্তারের ছবিতে বাংলাদেশকে খুঁজে পাই। তার ছবির রঙ যেন বাংলাদেশেরই রঙ। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৫ টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে বইটির আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিমূর্ত ধারার ছবি যারা এঁকেছিলেন এদের মধ্যে কিবরিয়া, আমিনুল ইসলামের পর নাজমা আক্তার। নিজের অধ্যাবসায় ও সাধানার জন্যই আজ নাজমা আক্তার এটা করতে পেরেছেন। আধুনিকতার সংকট থেকেই মূলত বিমূর্ত ধারার ছবি এসেছে। নাজমা আক্তারের ছবিতে ছিল ছন্দিত বিমূর্ত ধারা। এটা শুরু হয়েছিল ফ্রান্স থেকে। তার ছবির সামনে দাড়াঁলে মনে হবে, যেন এটি গতিশীল। মূহুর্ত হতে মূহুর্ত যেন নিয়ে যায় আমাদের। 

তিনি আরো বলেন, তার ছবির মধ্যে আমরা পাই আলোর ঝলকানি। স্মৃতি বা রোদকে আমরা মূর্ত করে তুলতে পারব না, ফলে আমাদের বিমূর্ত ধারার কাছে যেতে হয়। নাজমা আক্তারের ধারা অব্যহত থাকলে তিনি এতে উৎকর্ষে যেতে পারবেন বলে আশা করি। প্রত্যেক শিল্পী তার মনের মূর্তকে বিমূর্ত করে ছবি আঁকেন। তার ছবির মধ্যে আলোছায়া ও ছবির মনের মূর্তরুপ খুঁজে পাওয়া যায়। তাই বিমূর্ত ছবির রুপও একধরনের মূর্ত রুপ। বইিটর মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট শিল্পী মনিরুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বইটি নিয়ে আলোচক স্থপতি সামসুল ওয়ারেস। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

শিল্প সমালোচক সামসুল ওয়ারেস বইটির আলোচনায় বলেন, বিমূর্ত ধারার ছবি একটি নতুন ধারার শিল্প। যা মানুষ বলতে পারে না, লিখতে পারে না। তাই শিল্পের মাধ্যমে তুলে ধরা যায়। শিল্পীরা আমাদের মমত্ত্ববোধ শেখান, গাছপালাকে ভালোবাসতে শেখান এবং সর্বাপরি দেশকে ভালোবাসতে শেখান। শিল্পরা আমাদের গভীর ভাবে ভাবতে শেখান। বিমূর্ত ছবি গুলোর মধ্যে নাজমা আক্তারের ছবি গুলো আমাদের ভাবনার জগৎকে নাড়া দেয়। শিল্পীর ছবি আঁকার পর দর্শকদের মধ্যে কল্পনার জগতে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকিটা কল্পনা করতে হয় দর্শককে। শিল্প আমাদের আত্মার প্রশান্তির জন্য প্রয়োজন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বজলুর রহমানের উপস্থাপনায় বইটি নিয়ে  শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আর্ট বা শিল্প আছে। শিল্পীর নিজস্ব জগৎ রয়েছে। যার এমন নিজস্ব জগৎ থাকে না, তিনি বড় শিল্পী হতে পারেন না। সম্মানিত অতিথি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের পরিবারের সবাই শিল্প চর্চা করছি। এসময় তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ দেন। 

উল্লেখ্য, এবারের অমর একুশে বই মেলায় বইটি মেরিট ফেয়ার প্রকাশনী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলে পাওয়া যাবে। 

ইনিউজ ৭১/এম.আর