বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে টানা ১৪ দিন আন্দোলনের পর এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য কুয়াকাটা-বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাথায় সাদা কাপড় বেঁধে মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধের কারণে সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার কলাবাগানে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ কার্যালয়ে সিন্ডিকেটের সভা হয়। তাঁদের আশা ছিল, ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে সিদ্ধান্ত আসবে। উপাচার্য পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই গত রাতের ওই সভা শেষ হয়। এ অবস্থায় মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি আহŸান করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, ঢাকায় মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হলেও সেখানে উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে নৈতিক স্খলনের অভিযোগে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক বলেন, সিন্ডিকেটের সভায় সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি। গত সোমবার দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের পর উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে লিখিত দেওয়ার দাবিতে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। বেঁধে দেওয়া সময়সীমা মঙ্গলবার বেলা ১টায় শেষ হয়। তার আগে গত ১ এপ্রিল উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি লোকমান হোসেন বলেন, আমরা সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম। সভায় উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত না হওয়ায় গত রাতে আমরা বসে অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করি। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করেন। মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে মহাসড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। অবরোধের কারণে বরিশাল থেকে বরগুনা, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, ভোলাসহ অন্তত ২০টি রুটের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। দুটি মহাসড়ক অবরোধ করায় দুই পাশে শত শত যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়েছে। যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। সড়ক অবরোধ করে সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে লিখিত কোনো কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলবে। কোনো ক্লাস, পরীক্ষায় তাঁরা অংশ নেবেন না।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।