প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৪
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দিন শেষে গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারে, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতিতে রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার হিসেবে ধরা হয়েছে।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলারের বৃদ্ধি বৈদেশিক লেনদেনে ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিলে নিট রিজার্ভ নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ হিসাবেও আলাদা পরিমাণ ধরা হয়, যেখানে এসডিআর খাত, আকুর বিল এবং ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাব বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি মাসে গড়ে ৫.৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হলে বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসেরও বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ রিজার্ভ থাকা একটি দেশের জন্য আবশ্যক।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে কোভিড-১৯ এর প্রভাব, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ঘাটতির কারণে রিজার্ভ ক্রমশ কমতে থাকে।
ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে। এতে কিছুটা চাপ তৈরি হলেও সাম্প্রতিক সময়ে রিজার্ভের পুনরুদ্ধার ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
২০২২ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়েছিল। সেই সহায়তা এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহের উন্নতির ফলে রিজার্ভ পুনরায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, রিজার্ভ ধরে রাখতে আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং রপ্তানি আয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রবাসী আয়ের প্রবাহ অব্যাহত রাখা জরুরি।