বাংলাদেশে গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বুধবার রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কার্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশীয় পরিচালক এলাইন পিয়ারসনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সময় প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং কমিশনের কাজকর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন। তিনি জানান, গুম সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তের জন্য কমিশন ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে এবং যে কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলে তার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এইচআরডব্লিউ’র প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নিয়ে তারা তাদের উদ্বেগের কথা জানান। তাদের মতে, এসব ঘটনা মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের প্রতি একটি বড় হুমকি।
এ সময় তারা দৃঢ়ভাবে দাবি করেন, গুমের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যাতে মানুষের আস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা আরও বলেন, শুধু অভিযোগ নয়, এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে।
এইচআরডব্লিউ প্রতিনিধিদল আগামীকাল, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে। তারা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
এ ধরনের সাক্ষাৎগুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। এ ধরনের আলোচনা ও পদক্ষেপগুলোর উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি সাধন এবং দেশজুড়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিনিধিরা আরও জানান, তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চায়। এজন্য তারা বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করে এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করবে।
এছাড়াও, তারা উল্লেখ করেন যে, গুম বা মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর ওপর মনোযোগ দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে।
এই ধরনের আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দেশের অবস্থানও দৃঢ় হতে পারে, যা বাংলাদেশকে বিশ্বের বাকি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।