হঠাৎ করেই মেহেরপুরে শীর্ষ সুদ ব্যবসায়ীদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার শুরু করেছে পুলিশ। অবৈধভাবে সুদের ব্যবসা, প্রতারণা এবং আইনলঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তরা গ্রেফতার তালিকায় রয়েছেন। গেল কয়েক দিনে পুলিশের তৎপরতা বেশ আতঙ্কিত করে তুলেছে মেহেরপুরের সুদ কারবারিদের।
গত (১১ই মার্চ) শনিবার রাতে জেলার গাংনী উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করে শীর্ষ ৩ সুদ ব্যবসায়ীকে আটক করে থানা পুলিশ। গাংনী পৌর এলাকার উত্তরপাড়ার জমির উদ্দিনের ছেলে হানিফ ও একই এলাকার জমির উদ্দিনের ছেলে আনারুল ইসলামের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ৩২০টি চেক, ৫টি মোটরসাইকেল, ৬৭৯টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প এবং ১টি সোনার চেইন উদ্ধার করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। একই অভিযোগে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের মৃত খোকন মন্ডলের ছেলে দিবাস্তিন মন্ডলের কাছ থেকে ৪৪টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ২৭টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক এবং ৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে পেনাল কোড দন্ডবিধিতে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। ধারা:- ৪০৬, ৪২০, ৪২২, ৪২৩ ও ৪২৪ তারিখঃ ১১/০৩/২০২৩ ইং। গ্রেফতারকৃতদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার (১২ মার্চ) আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'মানুষের অভাব-অনটনকে পুঁজি করে বেড়েছে মহাজনী সুদের কারবার। তাদের কাছ থেকে লাখ টাকার বিপরীতে সপ্তাহে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার সুদ টানতে হয়। দিতে হয় চক্রবৃদ্ধির সুদও। প্রভাবশালী মহাজনী কারবারিরা টাকা দেওয়ার সময় ব্লাঙ্ক চেক ও স্টাম্প স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত চালিয়ে সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে।'
মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদি রাসেল বলেন, 'গ্রামের মানুষকে স্ট্যাম্প ও সাদা ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে চড়া সুদে টাকা ধার (হাওলাত) দিতো দিবাস্তিন নামক সুদ ব্যবসায়ী। কেউ টাকা পরিশোধ করতে না পারলে, তাদের স্বর্ণের গহনা ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য মালামাল জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে আসতো। অভিযোগের ভিত্তিতে দিবাস্তিনের বাড়িতে শনিবার সন্ধ্যারাতে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় গাংনী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মাহবুবুল হক মন্টুর সাথে। তিনি বলেন, 'সমবায় সমিতির মাধ্যমে ঋণদান আইনগত ভাবে বৈধ। তবে শর্ত হচ্ছে একটি সমবায় সমিতি শুধু তার সদস্যদের মধ্যে ঋণ দিতে পারবে। সদস্যদের বাইরে ঋণদান করলে সেটা অবৈধ। সবমিলিয়ে গাংনীতে ২০৫টি কৃষি, মৎস্য এজাতীয় সমবায় সমিতি রয়েছে; তার মধ্যে ঋণদান কার্যক্রম করে হাতেগোনা ১০টির মতো সমবায় সমিতি। এখন দেখা যাচ্ছে অনেকেই বহু টাকার মালিক অনিবন্ধিতভাবে নিজেরাই ঋণদান করছে সুদ নিচ্ছে এরা সম্পুর্ণ অবৈধ।'
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।