টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফুড কার্ড (রেশন কার্ড) কে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছে। গত জুন মাস থেকে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ডের মতো ১৯৯২ সালে আগত রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ড একই করাই এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এসময় দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) কে ইট পাটকেল ছুঁড়লে ১০-১২ জন এপিবিএন পুলিশ আহত হন। আত্মরক্ষার্থে ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়।
শুধু তাই নই, গত জুলাই মাস থেকে ওই নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা রেশন গ্রহন করছেনা।
সুত্রে জানা যায়, টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে (১৯৯২ সালে আগত রোহিঙ্গা) পুরাতন ও নতুন (২০১৭ সালে আগত) রোহিঙ্গারা বসবাস করে আসছে। এতোদিন পুরাতন রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ড নতুন রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ডের চেয়ে ভিন্নতা ছিল।
সকল রোহিঙ্গাদের মাঝে সমপরিমাণ খাবার বিতরনের জন্য পুরাতন রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ড ফেরত নিয়ে গত জুন মাসে নতুন ফুড কার্ড ইস্যু করা হয়। নতুন ফুড কার্ড অন্যান্য ক্যাম্পের সমসাময়িক (২০১৭ সালে)আগত নতুন রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ডের অনুরূপ হওয়ায় নয়াপাড়া রেজিস্ট্রাড" ক্যাম্পের পুরাতন রোহিঙ্গারা নতুন ফুড কার্ড গ্রহণ না করে জুলাই মাসের রেশন উত্তোলন করেনি।
নয়াপাড়া রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের পুরাতন রোহিঙ্গাদের দাবি হচ্ছে নতুন রোহিঙ্গাদের ফুড কার্ড এবং তাদের ফুড কার্ড একই রকম হওয়াতে রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের পুরাতন ও নবাগত রোহিঙ্গাদের সমান মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। তাই তারা কোন ভাবেই এটা মেনে নেবে না।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (RRRC) ও UNHCR কর্তৃপক্ষ ফুড কার্ড বিষয়ে ওই সিদ্ধান্ত গ্রহন করে এবং এই সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছে।
এ প্রেক্ষিতে ১ আগস্ট রবিবার ফুড কার্ডকে (নতুন এবং পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে) কেন্দ্র করে ভোর ৫ টায় নয়াপাড়া ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গা নারী জড়ো হতে থাকে ।
এপিবিএন সদস্যরা উশৃংখল রোহিঙ্গা নারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে রোহিঙ্গা নারীরা এতে শান্ত না হয়ে দফায় দফায় বিভিন্ন স্পটে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। প্রায় ছয় ঘন্টা পর্যন্ত রোহিঙ্গা নারীরা উশৃংখল এবং এক পর্যায়ে রোহিঙ্গা নারীরা সকাল ১০ টার দিকে সংঘবদ্ধ হয়ে অতর্কিত ভাবে পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও ধস্তাধস্তি শুরু করে।
পরে পুলিশ জান মাল রক্ষায় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ৫ রাউন্ড উপরের দিকে শট গানের গুলি করে। এতে রোহিঙ্গা নারীরা ছত্র ভংগ হয়ে পালিয়ে যায়। ইট পাটকেলের আঘাতে এপিবিএন এর ১০-১২ জন সদস্য আহত হয়।
এ বিষয়ে ২ আগস্ট RRRC, UNCHR ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কক্সবাজার ১৬ এপিবিএন এর অধিনায়ক এসপি মোঃ তারিকুল ইসলাম তারিক উক্ত তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ফুড কার্ড বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ক্যাম্পের পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
গত কয়েকদিন তারা এ নিয়ে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করে আসছিল। তাদের এপিবিএন ক্যাম্পে ডেকে বোঝানো হয় এবং তারা তা মেনে নেয়। কিন্তু রবিবার হঠাৎ করে রোহিঙ্গা নরাীরা বিক্ষোভের চেষ্টা চালায় এবং এক পর্যায়ে পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
উক্ত বিষয়ে ক্যাম্প ইনচার্জ (CIC) এবং UNHCR এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য সব প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে । তবেএপিবিএন সতর্ক রয়েছে এবং ক্যাম্পে পাহারা জোরদার করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।