ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ১১২ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। তবে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি টাইগারদের। দিনের নবম ওভারে কাইল মায়ার্সের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার পর ব্যক্তিগত ৪ রানের ইনিংস খেলে মায়ার্সের শিকার হন মুমিনুল হকও।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ১০৩ রানের জবাবে ক্যারিবীয়দের ইনিংস থামে ২৬৫ রানে। ১৬২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুতে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয় লড়াইয়ে ফেরার আশা দেখালেও পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২ উইকেটে হারিয়ে টাইগারদের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৫০ রান।
আর আজ তৃতীয় দিনে শনিবার (১৮ জুন) দলের খাতায় ১৪ রান যোগ করতেই বিদায় নেন শান্ত। ইনিংসের ২৯তম ওভারে মায়ার্সের করা চতুর্থ বলে খোঁচা লাগিয়ে ক্যাচ তুলে দেন প্রথম স্লিপে থাকা জন ক্যাম্পবেলের হাতে। ৪৫ বল মোকাবিলায় ৩ বাউন্ডারিতে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। এরপর এরপর ৩৫তম ওভারে এসে মায়ার্স এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মুমিনুল হককে। রিভিউ আবেদন করে লাভ হয়নি।
অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি ইনসুইংয়ে হিট করে লেগ স্টাম্পে। আম্পায়ার কলের কারণে রিভিউ বাংলাদেশ ফেরত ফেলেও দুর্ভাগ্যকে সঙ্গে নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় মুমিনুলকে। রান খরা যেন কাটছেই না সদ্য সাবেক এই অধিনায়কের। প্রথম ইনিংসের মতো আজও ফিরতে পারতেন শূন্য রানেই। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে মায়ার্সের করা বলটি ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প গেষে পেছেনে চার হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ ৯২ রান। এখনো তারা স্বাগতিকদের চেয়ে পিছিয়ে আছে ৭০ রানে। জয় ৩৪ ও লিটন দাস ১১ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাট করছেন। এর আগে দ্বিতীয় দিন ৩১ বলে ২২ রান করে জোসেফের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তামিম। জোসেফের বলে মিরাজ আউট হন স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। ফেরার আগে ৬ বলে ২ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের ১০৩ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৪ রান করেন দলপতি ক্রেগ ব্রাথওয়েট। বালাদেশের বোলিং লাইন-আপের সামনে বড় বাধা হয়ে উঠেছিলেন ব্রাথওয়েট। ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন তিনি। সেই ব্রাথওয়েটকে সেঞ্চুরির আগেই ফেরান খালেদ মাহমুদ। গুড লেংথের এক বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফিরে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ২৬৮ বলে ৯টি চারের মার খেলেন তিনি। এ নিয়ে ৭৮ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে পাঁচবার নার্ভাস নাইন্টিজে আউট হলেন তিনি। দুবারই আউট হয়েছেন ৯৪ রানে। ৯৭ রানে একবার, ৯৫ রানে একবার ও ৯১ রানে একবার উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি।
কাইল মায়ার্স যে বাংলাদেশের বিপক্ষে কতটা ভয়ঙ্কর সেটা অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেই বুঝিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সেই মায়ার্সের উইকেট পায় অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিচক্ষণতায়। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউর আবেদন নিয়ে রিভিউ নিলে সফল হন সাকিব। প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মায়ার্স। মিরাজ ফেরান জশুয়া ডা সিলভাকেও। ফেরার আগে ২৪ বলে ৭ রান করেন মায়ার্স। মিরাজের বলে সিলভা আউট হন নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
আলজারি জোসেফ মিরাজের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ১৫ বল খেলেও কোনো রান তুলতে পারেননি তিনি। কেমার রোচও এবাদতের শিকার হওয়ার আগে কোনো রান তুলতে পারেননি। খালেদের গুড লেংথের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে মিরাজের হাতে ক্যাচ উঠিয়ে দেন হাফসেঞ্চুরিয়ান ব্লাকউড। ১৩৯ বলে ৬৩ রান করেন তিনি। উইন্ডিজের শেষ ব্যাটার হিসেবে মিরাজের আউট হন জায়দেন সিলস। বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট নেন মিরাজ। এবাদত ও খালেদ পান দুটি করে উইকেট। সাকিব ও মুস্তফিজ শিকার করেন একটি করে উইকেট।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ৫১ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে শেষ পর্যন্ত ১০৩ রান করতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন আলজারি জোসেফ ও জায়দেন সিলস। দুটি করে উইকেট শিকার করেন কেমার রোচ ও কাইল মায়ার্স।
সাকিবের ফিফটি ছাড়া ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন অন্য ব্যাটাররা। বলার মতো স্কোর ছিল শুধু তামিম ইকবালের করা ২৯ রান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১২ রানের ইনিংস খেলেন লিটন কুমার দাস। বাকিরা কেউ স্পর্শ করতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর। শূন্য রানের লজ্জায় ডোবেন ছয় টাইগার ব্যাটার।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।