কাঁচা মরিচ আমদানি বাড়লেও দামে উর্ধ্বগতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: বুধবার ৫ই জুন ২০২৪ ০৬:২৬ অপরাহ্ন
কাঁচা মরিচ আমদানি বাড়লেও দামে উর্ধ্বগতি

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে কাঁচা মরিচ আমদানি।এখন প্রতিদিনই বন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে। তবে বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়ালেও কমছে না দেশীয় কাঁচা মরিচের দাম।আমদানিকারকরা বলছেন,দাম বাড়ার কোন প্রশ্নই আসে না,ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কাঁচা মরিচের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। 


এদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন,প্রচন্ড গরম ও কৃষকেরা বোরো ধান কাটা মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ক্ষেত থেকে কাঁচা  মরিচ তুলছেন না,তাই বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় মোকামগুলোতেই দাম বেশি। 


আজ বুধবার বেলা ১১ টায় হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়,দুই দিন আগে মানভেদে কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ বুধবার সেই কাঁচা মরিচ কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে এখন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বন্দরে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ মানভেদে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 


তবে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম স্বাভাবিক রাখতে গত মাসের (২৩ মে) ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু করেন আমদানিকারকরা। পেঁয়াজের মত কাঁচা মচিরে দামও ওঠা নামা করছে। প্রতিকেজিতে শুল্ক দিতে হবে ৩৫ টাকা আর প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে ২০০ মার্কিন ডলারে।


হিলি বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা ব্যাটারি চালিত অটো চালক ফিজু বলেন,আমি দুই দিন আগে ৯০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কিনেছি।আজ সেই কাঁচা মরিচ কিনলাম ১৫০ টাকা কেজি দরে। এভাবে প্রতিটি জিনিস দাম বাড়লেও আমাদের অটো ভাড়া বাড়ে না। 


হিলি বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রেতা শেখ বিল্পব বলেন,প্রচন্ড গরম ও ধান কাটা মাড়ায় নিয়ে কৃষকেরা ব্যস্ত।তাই কৃষকেরা ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ তুলতে না পারায় বাজারে সরবরাহ কমে যাচ্ছে। একারণে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বৃদ্ধি পেলেও কমছে না দাম। আজ বুধবার সকালে আমি পাঁচবিবি হাট থেকে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে কিনে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। কাঁচা পণ্য প্রতি মনে ১ থেকে ২ কেজি কাঁচা মরিচ নষ্ট হয়ে যায়। এতে আমাদেরও লোকশানগুনতে হয়। পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে ৩ থেকে ৪ টাকা লাভ রেখে আমরা বিক্রি করে থাকি। আমরা কম দামে কিনতে পারলে কম দামেই বিক্রি করে থাকি। 


হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহীনুর রেজা শাহিন বলেন,বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমান কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে। আশেপাশের উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ। তবে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ার কোন প্রশ্নই আসেনা। বিভিন্ন হাট বাজারের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কাঁচা মরিচের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। বন্দর দিয়ে আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঁচা মরিচের দাম কমে আসবে।   

পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাব জানান,অনুমতি পাওয়ার পর গত ২৩ মে থেকে বন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়। এখন প্রতিদিনই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আমদানি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ একটি পচন শিল পণ্য তাই কাস্টমসের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত ছাড়করণ করা হচ্ছে এসব কাঁচা মরিচ। এতে বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের দৈনন্দিন আয়ও বেড়েছে। 


হিলি কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের ২৩ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ভারতীয় ৬১ টি ট্রাকে ৫২৮ মেট্রিক টন ৮৭৬ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।