এলপিজির দাম ফের বৃদ্ধি, ভোক্তাদের খরচ বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক
জাহিরুল ইসলাম মিলন
প্রকাশিত: রবিবার ২রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:০৮ অপরাহ্ন
এলপিজির দাম ফের বৃদ্ধি, ভোক্তাদের খরচ বাড়ল

তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য আবারও বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নতুন ঘোষণায় জানিয়েছে, ১২ কেজি এলপিজির দাম ১৯ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হয়েছে। বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, সৌদি আরামকোর প্রোপেন ও বিউটেনের মূল্যবৃদ্ধির ফলে এ সমন্বয় করা হয়েছে।  


গত জানুয়ারিতে এলপিজির দাম ৪ টাকা বাড়ানো হলেও তার আগে কয়েক মাস এই দাম অপরিবর্তিত ছিল। তবে ২০২৪ সালে এলপিজির দাম চারবার কমলেও সাতবার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দাম বাড়ানো হয়, আর কমানো হয় এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে।  


এছাড়া বিইআরসি অটোগ্যাসের দামও ৮৯ পয়সা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে, যা এখন প্রতি লিটার ৬৭ টাকা ৭৪ পয়সা। জানুয়ারিতে একাধিকবার পরিবর্তনের পর ফেব্রুয়ারিতেও অটোগ্যাসের দামের সমন্বয় করা হয়েছে।  


বিইআরসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সৌদি সিপির ভিত্তিতে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ ধরে নেওয়া হয়েছে, যেখানে সৌদি সিপি অনুযায়ী প্রতি মেট্রিক টন গড় মূল্য ৬২৮.৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।  


ভোক্তারা বলছেন, চলমান বাজার পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বাড়ায় তাদের দৈনন্দিন ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য এটি বাড়তি চাপ তৈরি করবে। অনেকেই সরকারের কাছে এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।  


অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম বাড়ার কারণে দেশে এর মূল্যবৃদ্ধি অনিবার্য হয়ে পড়েছে। তবে তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে স্থানীয় পর্যায়েও তার প্রভাব পড়বে।  


প্রতি মাসেই এলপিজির দাম পরিবর্তন হওয়ায় ক্রেতারা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ছেন। অনেকেই আগেভাগে গ্যাস কিনে মজুত রাখার প্রবণতা বাড়িয়েছেন, যা বাজার ব্যবস্থার জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।  


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে নিরবচ্ছিন্ন এবং সহনীয় মূল্যে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে নীতিগত পরিবর্তন আনা জরুরি। তারা মনে করেন, দেশীয় উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানো হলে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।