রংপুরে ছাত্র আন্দোলনে নিহত মুন্না হত্যা: সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের রিমান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি - রংপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার ৩১শে জানুয়ারী ২০২৫ ১২:৪৫ অপরাহ্ন
রংপুরে ছাত্র আন্দোলনে নিহত মুন্না হত্যা: সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের রিমান্ড

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার সকালে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতের বিচারক দেবী রানী রায় এ আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কোতোয়ালি থানা থেকে প্রিজন ভ্যানে করে নুরুজ্জামান আহমেদকে আদালতে নেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মোস্তাফিজার রহমান তদন্তের স্বার্থে ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।  


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, গত ৪ আগস্ট রংপুর সুপার মার্কেট–সংলগ্ন এলাকায় ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাহমুদুল হাসান মুন্না নিহত হন। এই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি নুরুজ্জামান আহমেদ। হত্যার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, নুরুজ্জামানের আইনজীবী ইফতা আখতার দাবি করেন, তার মক্কেল লালমনিরহাটের বাসিন্দা এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই তার রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করা হয়েছে।  


এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরের জুম্মাপাড়া পোস্ট অফিসের গলির একটি বাড়ি থেকে নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে মাহমুদুল হাসান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। রিমান্ড শুনানির সময় আদালতে বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে দীর্ঘ যুক্তিতর্ক হয়। বাদী পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য নুরুজ্জামান আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অপরিহার্য।  


নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্র আন্দোলনের পর তার নামে একাধিক মামলা হয়েছে। গত পাঁচ মাসে তার বিরুদ্ধে লালমনিরহাট ও রংপুরে মোট আটটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, মামলাগুলোর বেশ কয়েকটিতে নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সহিংসতার উসকানি ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে।  


এদিকে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, ছাত্র আন্দোলন দমনে শক্তি প্রয়োগের ফলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে নুরুজ্জামান আহমেদকে ফাঁসানো হচ্ছে।  


আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, রিমান্ডের সময় নুরুজ্জামান আহমেদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলে তদন্তের অগ্রগতি হতে পারে। তবে এখনো এ বিষয়ে আইএসপিআরের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।