কুয়াকাটা বেড়িবাঁধে কার্পেটিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের প্রতীকী জানাজা

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা জিরোপয়েন্ট থেকে লেম্বুর বন পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কের কার্পেটিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মানহীন উপকরণ ব্যবহার, বিটুমিন কম দেওয়া, লবণাক্ত বালু দিয়ে মাটি ভরাট এবং নকশা অনুসরণ না করার অভিযোগে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা বুধবার বিকেলে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। স্টুডেন্ট এলায়েন্সের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা ‘কাপনের কাপড়’ বিছিয়ে প্রতীকী জানাজা পড়েন এবং সড়কের ‘মৃত মান’ নিয়ে প্রতিবাদ জানান।

এলজিইডির তথ্য অনুযায়ী, জিরোপয়েন্ট থেকে সূর্যাস্ত পয়েন্টের আগ পর্যন্ত রাস্তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। কাজটি পেয়েছে ‘ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, যার মালিক জসিম মৃধা। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ২৫ নভেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি স্থানে খোয়া ঢালাই অসমান, বিটুমিনের পরিমাণ কম হওয়ায় কার্পেটিং ঠিকভাবে বসছে না। কিছু জায়গায় হাত দিয়ে টান দিলেই কার্পেটিং উঠে আসছে। স্থানীয় বাসিন্দা কাদের মাঝি বলেন, “আগে রাস্তা ভালো ছিল। এখন আধা ইঞ্চি ঢালাই দিচ্ছে। আমরা এমন মানহীন কাজ চাই না।” জেলে জাকির জানান, “এই বেড়িবাঁধই আমাদের ঝড়–জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে। এখানে অনিয়ম হলে আমাদের জীবনঝুঁকি বাড়বে।”

পর্যটকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজশাহীর পর্যটক মাহমুদ হাসান বলেন, “হাত দিয়ে কার্পেট উঠে আসছে—এমন রাস্তা পর্যটন এলাকায় মানায় না।”

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার জসিম মৃধা দাবি করেন, তাদের বরাদ্দ কম দেওয়া হয়েছে। “৪০ মিলি কার্পেটিং দরকার, আমাকে দেওয়া হয়েছে ২৫ মিলি। তাছাড়া আশপাশে মিঠা পানির অভাব রয়েছে,” বলেন তিনি।

এলজিইডির পটুয়াখালী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসাইন আলী মীর জানান, তদন্তে কিছু অনিয়ম সত্য পাওয়া গেছে, ঠিকাদারকে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।