পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, অতীতের ফ্যাসিস্ট আমলে পুলিশের ওপর যে কলঙ্ক চাপানো হয়েছিল তা দূর হতে সময় লাগলেও, সামনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা মহানগরীর বয়রা পুলিশ লাইন্সে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইজিপি বলেন, “৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রের মধ্যে যদি ৫০০ কেন্দ্রে সমস্যা হয়, রি-ইলেকশন হবে। কিন্তু পুরো নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। কারণ মানুষ এখন নির্বাচনমুখী, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।”
তিনি জানান, মানুষ নির্বাচনকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং উদগ্রীবভাবে অপেক্ষা করছে। সমাজের সচেতন জনগণ ও গণমাধ্যম নির্বাচনকে ঘিরে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নাশকতা দমনে পুলিশের প্রস্তুতির বিষয়ে বাহারুল আলম বলেন, পুলিশের একার পক্ষে বল প্রয়োগ করে সহিংসতা দমন করা সম্ভব নয়—জনগণের সহযোগিতাই সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি বলেন, “আমরা আর সেই পুলিশ হতে চাই না যারা ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে সন্ত্রাস দমন করে। আমরা আইনের প্রক্রিয়া, চার্জশিট, আদালত—এসব নিয়ম মানিয়েই অপরাধ দমন করতে চাই।”
আইজিপি আরও জানান, অতীতে পুলিশের বিরুদ্ধে হওয়া গুম, হত্যার অভিযোগের কারণে জনগণের মধ্যে যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য পুলিশ ধৈর্য ও নিয়মতান্ত্রিকতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করছে। অনেক সময় মানুষ অতীতের স্মৃতি থেকে উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করতে আসে, কিন্তু পুলিশ সহনশীলতা বজায় রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের নির্বাচনী কেন্দ্র প্রবেশাধিকার প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, “আগে সিল মারার কারণে আপনাদের ঢুকতে দেওয়া হতো না। এবার আমরা নিজেরাই বলবো, আসেন—দেখে যান ভোট কেমন হচ্ছে।”
তিনি জানান, পুলিশের সব ইউনিটে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশিক্ষণ চলছে। গত তিনটি নির্বাচনে যে বিতর্ক ছিল, তা থেকে বেরিয়ে এসে একটি “সবচেয়ে ফ্রি, ফেয়ার, উৎসবমুখর ও গ্রহণযোগ্য” নির্বাচন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে পুলিশ কাজ করছে। এ জন্য কোনো পক্ষপাত বা অনিয়ম না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অবশেষে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “সকলের সহায়তায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে আমরা একটি সফল নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।”