প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩০
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়া পাড়ায় হাজ্বী ইসমাইল মার্কেটে শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত দুইটার দিকে অগ্নিকাণ্ডে ১৯টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, গভীর রাতে হঠাৎ মার্কেটের একটি অংশ থেকে আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং রাতের নিস্তব্ধতাকে চিৎকার-চেঁচামেচিতে ভরিয়ে তোলে। ব্যবসায়ীদের বছরের পরিশ্রম, সঞ্চয় এবং স্বপ্ন এক মুহূর্তে ভস্মীভূত হয়ে যায়।
মার্কেটে কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় রামগড় ও মাটিরাঙ্গা থেকে ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় নেয়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় বেশি লাগে। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার এবং ভিডিপি সদস্যদের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস ও দোকানমালিকরা ধারণা করছেন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে। তবে বাজারের একটি গাড়ির ওয়ার্কশপ, কয়েল বা সিগারেটের আগুন থেকেও আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে ছিল তেলের দোকান, মোটর গ্যারেজ, হোটেল, ফার্নিচার এবং কনফেকশনারি। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদিও ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে।
ঘটনার খবর পেয়ে সিন্দুকছড়ি সেনা জোনের অধিনায়ক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ এনামুল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা বলেন, সৌভাগ্যক্রমে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবে অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণের জন্য তদন্ত চলছে।
স্থানীয়রা এই ঘটনা সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি তুলেছেন।
এ ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীদের মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি গুরুতর হলেও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় এবং পুনর্বাসনের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ভবিষ্যতে এমন অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।