পটুয়াখালীর মহিপুরে সেচ্ছাসেবী সংগঠন “বাতিঘর” এর উদ্যোগে সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে তিন শতাধিক কৃঞ্চচুড়া, রাধা চুড়া,সোনালু,অর্জুন সহ বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও ঔষধী গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১ টায় মহিপুর ইউনিয়নের ইউসুফ পুর লেকে এ বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হামিদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা, মহিপুর এসআরএসবিএস সমিতির সভাপতি মোঃ সোহাগ হাওলাদার, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, পর্যটন ও উন্নয়ন বিষয়ক ম্যাগাজিন "আলোকিত কুয়াকাটা"র প্রকাশক ও সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, এসআরএসবিএস সমিতির সভাপতি ও বাতিঘর এর সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্টু, বাতিঘরের সভাপতি মোঃ ইলিয়াস রেজা, হস্ত শিল্পী আঃ ছত্তার ফকির সহ আরো অনেকে। সপ্তাহ ব্যাপী বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওসার হামিদ বলেন, বাতিঘর সংগঠনের সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন কর্মসূচী একটি অনন্য উদ্যোগ। এটি অতন্ত্য ভালো কাজ। এ ধরনের ভালো কাজে উপজেলা প্রশাসন সব সময় পাশে থাকবে।
বাতিঘর'র সদস্যরা জানান, বৈশ্বিক পরিবেশ দিনে দিনে উষ্ণ হয়ে উঠেছে। ঝড় বন্যা থেকে বাঁচতে সবুজায়নের কোন বিকল্প নেই। তবে শুধু সবুজায়নই নয়, বৃক্ষ রোপণের মধ্যদিয়ে পর্যটন এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনই তাদের মুল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
বাতিঘর সংগঠনের সহ সভাপতি ও আলোকিত কুয়াকাটা'র সম্পাদক আনেয়ার হোসেন আনু জানান,বৃক্ষ রোপণ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, মাদকমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সহ “সবুজ গ্রাম সবুজ দেশ, এই আমাদের বাংলাদেশ” এমন স্লোগান কে সামনে “বাতিঘর” সংগঠনটি সমুদ্র উপকূলে নানা সামাজিক কাজের উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাতিঘর এর সদস্যরা। সংগঠনটি অন্ধকারে আলোর দিশারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এমন সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
বাতিঘর এর সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন, সবুজ গ্রাম এখন আর সবুজ নেই। গাছ কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে দালান কোঠা, বাড়িঘর, শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। জীব জন্তু ও পশু পাখিরা হারিয়েছে তাদের আশ্রয়স্থল। বেশিরভাগ মানুষ পারিবারিক দৈনন্দিক চাহিদা মিটাতে গিয়ে এসব নিয়ে তাদের ভাবার সময় নেই। রেল গাড়ির মত মানুষের জীবন।
গ্রাম ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়া, নৈতিক শিক্ষা ফিরিয়ে আনা, সবুজ গ্রাম, সবুজ দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবি, চাকুরীজীবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক মনা কয়েকজন শিক্ষিত মানুষ একত্রিত হয়ে চলতি বছর জানুয়ারীতে “বাতিঘর” নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা সবুজায়ন কর্মসূচি ২০২৫ এর প্রথম পর্যায়ে আড়াই হাজার তালের বীজ রোপণ করেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে কৃঞ্চচুড়া, রাধাচূড়া, সোনালু সহ বিভিন্ন ফলজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণের উদ্যেগ নিয়েছে।
পরিচ্ছন্ন গ্রাম, পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে ইতোমধ্যে সংগঠনটি নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। স্কুল কলেজ ভিত্তিক সচেতনতা তৈরি, ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাতিঘর কাজ করে যাচ্ছে।
“সবজ গ্রাম, সবুজ দেশ, এই আমাদের বাংলাদেশ” এ স্লোগানকে সামনে রেখে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ”বাতিঘর” এরই মধ্যে পর্যটন এলাকার খননকৃত খালের পাড়ে, বেরীবাধঁ ও সড়কের পাশে সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ করছে। মহিপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে। চারা রোপণ থেকে শুরু করে বড় হওয়া পর্যন্ত পরিচর্যা সংগঠনের সদস্যরাই করবেন।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন “বাতিঘর” এর সভাপতি ইলিয়াস রেজা বলেন, নিজ অর্থায়নে সংগঠনের সদস্যরা সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। আমরণ চালিয়ে যাবেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ধারাবাহিক সামাজিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ হাতে নিয়েছি। যা চলমান থাকবে।