প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবার শরিফে ভক্ত রাসেল মোল্লার (২৮) মৃত্যুর পর পুলিশে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে নিহত রাসেলের বাবা মো. আজাদ মোল্লা বাদি হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, চুরি, ক্ষতিসাধন এবং জখমের অভিযোগে মামলা করেন। এই মামলায় প্রাথমিকভাবে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরিফ আল রাজিব। তিনি জানান, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে প্রশাসন সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
নিহত রাসেল মোল্লা গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা গ্রামের আজাদ মোল্লার ছেলে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নুরাল পাগলের দরবারে প্রবেশ করার পর তাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। আহত রাসেল মোল্লাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হলে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ আগস্ট বাধ্যতামূলক কারণে মারা যান নুরাল পাগল। ওইদিন রাতে দরবারে ১২ ফুট উঁচু কবরের মধ্যে তার দাফন করা হয়, যা শরিয়ত বিরোধী বলে স্থানীয় ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি অভিযোগ তোলেন।
এরপর শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালীন বিক্ষুব্ধ জনতা নুরাল পাগলের রাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন।
এই ঘটনায় পুলিশের দুটি গাড়ি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মো. সেলিম মোল্লা বাদি হয়ে সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সোমবার রাত পর্যন্ত মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, নুরাল পাগলের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রশাসন ইতিমধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন চেষ্টা করছে যাতে শান্তি বজায় থাকে এবং আইনের আওতায় অপরাধীদের দায়িত্ব নেওয়া হয়।
ঘটনার তীব্রতা এবং ব্যাপকতা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গোয়ালন্দেও জনমনে শঙ্কা তৈরি করেছে। স্থানীয়রা আশা করছেন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।