প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৪
মাদারীপুরের কালকিনিতে সৈয়দ আবুল হোসেন একাডেমীর এক আয়ার পরিবারকে পুলিশে দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে একই বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক মো: জাহিদুল রহমানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ক্লাসরুম ঝাড়–পরিষ্কারকে কেন্দ্র করে আয়া সালমা বেগম ও শিক্ষক জাহিদুল রহমানের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে জাহিদুল রহমান আয়াকে থাপ্পড় দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং গলাধাক্কা দিয়ে স্কুল থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
আয়া সালমা বেগম তখন প্রশ্ন তোলেন, তার কোন অপরাধ হয়েছে। 이에 ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক তাকে বলেন, ‘তোর বাপ থাকলে তাকে নিয়ে আয়।’ আয়ার স্বামী আজিবর প্যাদা ঘটনার খবর পেয়ে স্কুলে এসে শিক্ষকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং স্ত্রীর প্রতি হস্তক্ষেপের কারণ জানতে চান। সেই সময় শিক্ষক জাহিদুল রহমান উভয়কে বাজে ভাষা ব্যবহার করে হুমকি দেন এবং পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
ভুক্তভোগী আয়া সালমা বেগম কান্না কন্ঠে বলেন, আমরা গরিব মানুষ হলেও সমাজে আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচার অধিকার রাখি। তাকে ক্লাসরুম ঝাড়–পরিষ্কারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র-ছাত্রী ও অন্যান্য অভিভাবকের সামনে শারীরিকভাবে হেনস্থা করার পাশাপাশি পুলিশ হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়ার পর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ উল আরেফীন জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা বলছেন, ঘটনার সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক জাহিদুল রহমান সাংবাদিকদের জানান, আয়া তার পুত্রবধু এবং যা ঘটেছে তা মিটে গেছে। তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন, আয়ার কাছে বিষয়টি জেনে নেওয়া উচিত। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মীরা ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, স্কুলের এমন ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ভীতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, প্রশাসন ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার পরিবেশকে শান্তিপূর্ণ রাখবেন।
উপজেলা প্রশাসন ঘটনার তদন্তে সরাসরি নিয়োগ করা কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আইন অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষার বিষয়েও নজর রাখছেন।
এই ঘটনায় স্থানীয় সমাজকর্মী ও অভিভাবকরা আয়ার পরিবারকে সমর্থন জানাচ্ছেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যায় ও সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি তুলছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার আশা প্রকাশ করেছেন, শিক্ষক ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রশাসন যৌথভাবে এই ঘটনার যথাযথ সমাধান করবেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরায় ঘটবে না।